সোমবার ● ২ মার্চ ২০১৫
প্রথম পাতা » অলৌকিক নয় লৌকিক » ষাঁড়-খাসি-মোরগ উৎসর্গ দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু
ষাঁড়-খাসি-মোরগ উৎসর্গ দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু
রাজধানীর সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর প্রাথমিক কাজের আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয় গত ০১ মার্চ ২০১৫ তারিখে। এসময় পদ্মা সেতুর ট্রায়াল পাইল স্থাপনে এ্যাংকর পাইলের কাজ শুরু করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির কাজ শুরুর ক্ষণটিকে তাদের রীতি অনুযায়ী দু’টি কালো ষাঁড়, দু’টি খাসি ও দু’টি মোরগ পদ্মা নদীতে উৎসর্গ করে। এগুলোকে নদী পাড়ে জবাই করে বিশেষ কৌশলে রক্তগুলো সরাসরি পদ্মায় দেয় হয়। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, কাজের সফলতা ও দুর্ঘটনা রোধে এই পশু উৎসর্গ করা হয়। ষাঁড়ের সামনের দুটি করে রান পদ্মা নদীতে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকি মাংস প্রকল্পের কর্মরতদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এটিকে চীনে রীতি বলে আখ্যা দেয়া হলেও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এমনটি ঘটে থাকে। এখনো আমাদের দেশে ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণের সময়েও এটি ঘটতে দেখা যায়। বলা হয়ে থাকে রক্ত উৎসর্গ করা হলে এখানে ভবিষ্যতে আর রক্তপাত ঘটবে না অর্থাৎ কোন প্রাণহানি বা দুর্ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার বৈ কিছুই নয়। এটি অতি প্রচীনকাল থেকেই চলে আসা একটি প্রক্রিয়া। বিভিন্ন প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোতেও দেবতাদের তুষ্ট করতে বলিদানের দৃষ্টান্ত রয়েছে। প্রকৃতির কাছে মানুষের সহজাত দুর্বলতার কারণে আদিম মানুষ বিভিন্ন উপায়ে দেবতাদের তথা প্রকৃতিকে পুজো করতো। প্রকৃতির ওপরে মানুষের নিয়ন্ত্রন না থাকায় আদিম মানুষ তাদের কল্পনায় বিভিন্ন দেবদেবীর অস্তিত্ব তৈরি করে নিতো। সেই মনগড়া দেবতাদের তুষ্ট করবার অন্যতম মাধ্যম ছিল পশু বলিদান বা উৎসর্গ।
কিন্তু আমরা বাস্তবের দিকে তাকালে দেখতে পাই, বড় বড় নির্মাণ কাজে অসামান্য প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছি ঠিকই, একইসাথে আদিম প্রবৃত্তিকেও ধারণ করে চলেছি। আর যতই পশু উৎসর্গ করে নির্মাণ কাজ সমাধা করা হোক না কেন, দুর্ঘটনা কখনোই থেমে থাকেনি। কারণ ফিটনেস বিহীন গাড়ি ও চালকের অদক্ষতার কারণে সড়কপথে হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।
একইভাবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই জাতীয় অযৌক্তিক বিশ্বাস সংক্রান্ত কাজ ফলাওভাবে প্রকাশ করার কারণে সাধারণ মানুষের মনে কুসংস্কার আরও জোরালোভাবে দানা বাধে। অজ্ঞানতা ও অন্ধবিশ্বাস বর্জনে তাই সকলের উচিত যুক্তিনির্ভর সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেয়া।
০২ মার্চ, ২০১৫
সূত্র ও ছবি: দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক যায় যায় দিন





কোভিড-১৯ থানকুনি পাতা খেয়ে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি’র গুজব
ধোঁকাবাজির নাম তান্ত্রিকশক্তি – ড. প্রদীপ দেব
আত্মঘাতী কুসংস্কার - ড. প্রদীপ দেব
২০১৬ সালের ১০ জুন থেকে ১৭ জুন পুরো পৃথিবী অন্ধকারে ঢেকে যাওয়ার গুজব
‘শয়তান তাড়ানোর’ নামে আদিবাসী নারীকে পিটিয়ে হত্যা
২৮ মে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হবে আমেরিকা
জ্বিন তাড়াতে পাঁঠা বলি 