সর্বশেষ:
ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

cosmicculture.science: বিজ্ঞানকে জানতে ও জানাতে
রবিবার ● ২৯ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ » বাংলাদেশের সক্রেটিস
প্রথম পাতা » বাংলাদেশের সক্রেটিস
১০৮৭ বার পঠিত
রবিবার ● ২৯ জুলাই ২০১২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশের সক্রেটিস

আরজ আলী মাতুব্বরএথেন্স থেকে লামচরি কতদূর? এশিয়া থেকে ইউরোপ! সমুদ্রপথে বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে ভারত মহাসাগর দিয়ে দক্ষিণ আটলান্টিক ও উত্তর আটলান্টিক হয়ে ভূমধ্যসাগরের কোল ঘেঁষে এথেন্স। এশিয়া ও ইউরোপ দুই মহাদেশের মাঝে এথেন্স। এখন থেকে দুই হাজার চারশত সাতাত্তর বছর আগে এই এথেন্সে জন্মগ্রহণ করেন গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস। আর এখন থেকে একশত সাত বছর আগে বাংলাদেশের এক অজ পাড়াগাঁ লামচরি গ্রামে আরজ আলী’র জন্ম। সক্রেটিসকে হেমলক নামক বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল ঈশ্বরের প্রতি তাঁর অন্ধ বিশ্বাসের অভাবের জন্য। আরজ আলীকে সমাজের কুসংস্কার বিষ দেয়া হয়েছিল যা তিনি কন্ঠে ধারণ করে হয়েছিলেন নীলকন্ঠ। একাত্তর বছর বয়সে সক্রেটিসকে হত্যা করে এথেন্স ভারমুক্ত হয়। পচাঁশি বছর বয়সে আরজকে মৃত দেখে লামচরি কি ভারমুক্ত হয়েছিল?
গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস প্রথম জীবনে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। পেলোপনেশিয়ার যুদ্ধে বীরত্ব দেখিয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে এথেন্সের সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। অবশেষে সবকিছু ছেড়ে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মানুষের মাঝে - মানুষকে প্রশ্ন করতে ও জাগাতে। এথেন্সের তরুণ সমাজ ভীড় জমালো সক্রেটিসের চারিদিকে। তরুণেরা নতুনত্বের পূজারী। কিন্তু সক্রেটিসের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা ভাবিয়ে তুলল এথেন্সের শাসককূলকে। কিভাবে নিস্তার পাওয়া যায় এই বুড়ো দার্শনিকের হাত থেকে? অবশেষে অজুহাত পাওয়া গেল। সক্রেটিস ঈশ্বর বিদ্বেষী। অতএব তাকে হত্যা কর।
আরজ আলী মাতুব্বর এর রচিত বই ‘সত্যের সন্ধানে’ এর প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত আরজ আলী মাতুব্বর এর রচিত বই ‘অনুমান’ এর প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত আরজ আলী মাতুব্বর এর রচিত বই ‘স্মরনিকা’ এর প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীতএথেন্স থেকে লামচরি। মৃত মায়ের ছবি তুলেছিলেন বলে আরজ আলী’র মায়ের জানাজা হলো না। আরজ আলীর’র অন্তরাত্মা থেকে উঠে আসতে লাগল হাজারো প্রশ্ন। প্রশ্ন করে করে নাড়িয়ে দিতে লাগলেন কুসংস্কারের ভিত। এথেন্সের রাস্তায় যেভাবে প্রশ্নের পর প্রশ্ন ঝরে পড়েছিল সক্রেটিসের মুখ থেকে তেমনই প্রশ্ন বাংলাদেশের, বরিশালের, লামচরির রাস্তায় রাস্তায়। বেঁচে থেকে তিনি কিছুই পাননি সমাজ থেকে। বরং আরজ আলী সমাজকে দিয়ে গেছেন অনেক কিছু। পচাঁশি বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করলেও তার অনেক আগেই এই সমাজ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিল। নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত তাঁর লাইব্রেরিটির ভগ্নদশা দিয়ে সেটাই বুঝি বলতে চায় সমাজ। সর্বোতভাবে চেষ্টা করা হয়েছে আরজকে মারতে। মরতে মরতে কখন যেন সেই আরজ আলী মাতুব্বর হয়ে যান বাংলাদেশের চারণ দার্শনিক - বাংলাদেশের সক্রেটিস।

লেখক: ড. অনীশ মন্ডল, সহকারী অধ্যাপক, অমৃত লাল দে কলেজ, বরিশাল।



আর্কাইভ

মহাবিশ্বের প্রারম্ভিক অবস্থার খোঁজেজেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের প্রথম রঙীন ছবি প্রকাশ
ব্ল্যাকহোল থেকে আলোকরশ্মির নির্গমন! পূর্ণতা মিলল আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের
প্রথম চন্দ্রাভিযানের নভোচারী মাইকেল কলিন্স এর জীবনাবসান
মঙ্গলে ইনজেনুইটি’র নতুন সাফল্য
শুক্র গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য নির্দেশকের সন্ধান লাভ
আফ্রিকায় ৫০ বছর পরে নতুনভাবে হস্তিছুঁচোর দেখা মিলল
বামন গ্রহ সেরেসের পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতার কারণ লবণাক্ত জল
রাতের আকাশে নিওওয়াইস ধূমকেতুর বর্ণিল ছটা,আবার দেখা মিলবে ৬,৭৬৭ বছর পরে!
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২০
মহাকাশে পদার্পণের নতুন ইতিহাস নাসার দুই নভোচারী নিয়ে স্পেসএক্স রকেটের মহাকাশে যাত্রা