বুধবার ● ৭ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » অর্জন/সাফল্য » উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সহায়তায় বুয়েটের উদ্ভাবন: অক্সিজেট
উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সহায়তায় বুয়েটের উদ্ভাবন: অক্সিজেট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ‘অক্সিজেট’ নামের ডিভাইস উদ্ভাবিত হয়েছে। ডিভাইসটি দিয়ে হাসপাতালের সাধারণ বেডেই ৬০ লিটার পর্যন্ত হাই ফ্লো অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব।
করোনা মহামারীতে অসুস্থ্য মানুষদের অক্সিজেন অত্যাবশ্যকীয় হলেও অক্সিজেন সংকটে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য আইসিইউ বা হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার প্রয়োজন হয়। দেশের হাসপাতালগুলোর সাধারণ বেডে রোগীকে প্রতি মিনিটে সর্বোচ্চ ১৫ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া যায়। এর বেশি অক্সিজেনের দরকার হলে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা লাগে অথবা আইসিইউতে নিতে হয় কিন্তু বিশেষ ওই ক্যানুলা ও আইসিইউ দুটোরই সংকট থাকায় অনেক রোগীকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয় না।
বুয়েটের উদ্ভাবিত এই ডিভাইসটির মাধ্যমে তীব্র শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদেরও হাসপাতালের সাধারণ বেডে রেখেই উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন-সহায়তা দেওয়া যাবে। যন্ত্রটির উৎপাদন খরচও খুব বেশি নয়। একটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার জন্য খরচ যেখানে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা, সেখানে বুয়েটের আবিষ্কৃত ডিভাইসটির উৎপাদন খরচ পড়বে মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা এবং এটি চলবে বিদ্যুৎ ছাড়াই। বাণিজ্যিক উৎপাদনে গেলে এই খরচ আরও কমে আসবে বলে মনে করেন উদ্ভাবকরা।
অক্সিজেটটে একটির জায়গায় দুটি ফ্লো-মিটার, একটি ১৫ ও আরেকটি ৫০ লিটারের ব্যবহার করা যাবে। অক্সিজেট নিম্নচাপ তৈরি করে পরিবেশ থেকে আরও বাতাস নেয়। দ্বিতীয় সংযোগে ৫০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন থাকে, যাতে প্রয়োজনে মোট ৬০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া যায়। অক্সিজেটে ব্যবহৃত মাস্কটি নন-ভেন্টেড সিপ্যাপ মাস্ক, যা মুখের সাথে আঁটসাটভাবে আটকানো থাকে। এর সাথে একটি পিপ ভালভ যুক্ত করে রোগীর জন্য অক্সিজেনের চাপ কত হবে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
সহকারী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসানের নেতৃত্বে আরও ছিলেন তাঁর চার ছাত্র মীমনুর রশিদ, ফারহান মুহিব, কায়সার আহমেদ ও কাওসার আহমেদ। পরে বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁদের সহযোগিতা করেন জৈবচিকিৎসা প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ তারিক আরাফাত, সহকারী অধ্যাপক জাহিদ ফেরদৌস ও সাঈদুর রহমান।