বুধবার ● ৮ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » মহাজাগতিক পথচলা » এপ্রিল
এপ্রিল
এপ্রিল তুলনামূলক শান্ত মাস, তবে রাতের আকাশে মনোযোগ দিন কারণ মহাকাশ আপনাকে সবসময়েই আকর্ষণীয় ফটোগ্রাফির সুযোগ করে দেয়।
আকাশ চেনার ক্ষেত্রে নবীনরা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের গ্যালাকটিক সেন্টার বা ঘূর্ণায়মান কেন্দ্র খুঁজে নিতে অমাবস্যা সপ্তাহটি বেছে নিন। এছাড়া রাতের মেঘমুক্ত ঝকঝকে আকাশ স্টার ট্রেইলের জন্য আদর্শ। এসময় মেঘমুক্ত আকাশে তারা গুলোকে উজ্জ্বল দেখা যায়, আমাদের চোখে ধরা না পড়লেও অনবরত এরা স্থান পরিবর্তন করছে। তাদের চলার এই পথটি ক্যামেরা দিয়ে খুব সহজেই ধরে রাখা যায়। পাশাপাশি এবছরে লাইরিডস উল্কাপাতের সময় চাঁদের আলো না থাকায় পর্যবেক্ষণ ও ফটোগ্রাফির জন্য চমৎকার সুযোগ মিলবে।
এমাসে যে ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করা আপনি হারাতে চাইবেন না -
■ ৮ এপ্রিল সুপারমুন। এটি চলতি বছরের দ্বিতীয় সুপারমুন। এসময় চাঁদ পৃথিবী থেকে মাত্র ৩৫৭,০৩৫ কি.মি. দূরে থাকায় অন্যান্য পূর্ণিমার থেকে বেশি উজ্জ্বলভাবে দেখা যাবে।
■ ২১-২২ এপ্রিল লাইরিডস উল্কাবৃষ্টি। আকশে চাঁদ সরুভাবে দৃশ্যমান হওয়ায় স্পষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
■ অমাবস্যা সপ্তাহ (২৩ এপ্রিল)। আকাশগঙ্গা ছায়াপথের গ্যালাকটিক সেন্টার বা ঘূর্ণায়মান কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করতে সুযোগ পাবেন।
এপ্রিল মাসের গুরুত্বপূর্ণ মহাজাগতিক ঘটনাবলীর তালিকা
এপ্রিল ৩: বুধ ও নেপচুন গ্রহ সংযোগ
নেপচুন গ্রহ বুধের ১.২º উত্তর দিয়ে রাত ০৯:১৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অতিক্রম করবে। বুধের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা ০.০, নেপচুনের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা ৮.০, এসময়ে চাঁদের দশা ৭৩.৩%।
এপ্রিল ৮: পূর্ণিমা (সুপারমুন)
বছরের দ্বিতীয় ও শেষ সুপারমুন এটি। পূর্ণিমার সময় সকাল ০৮:৩৫ মিনিট (বাংলাদেশ সময়)। সুপারমুন হচ্ছে কক্ষপথে পৃথিবীর সাপেক্ষে চাঁদের নিকট অবস্থানে সংঘটিত পূর্ণিমা। এসময় পূর্ণিমার চাঁদকে অন্যান্য সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি উজ্জ্বল দেখায়। পূর্ণিমা সংঘটনের সময় চাঁদ পৃথিবী থেকে মাত্র ৩৫৭,০৩৫ কি.মি. দূরে থাকবে।
এপ্রিল ১৫: চাঁদ ও শনি গ্রহ সংযোগ
শনি গ্রহ চাঁদের ২.৭º উত্তর দিয়ে বিকেল ০৩:১৯ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অতিক্রম করবে। চাঁদের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -১১.৭, শনির ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা ০.৪, এসময়ে চাঁদের দশা ৪৫.৮%।
এপ্রিল ১৬: চাঁদ ও বৃহষ্পতি গ্রহ সংযোগ
বৃহষ্পতি গ্রহ চাঁদের ১.৬º উত্তর দিয়ে ভোর ০৫:০৬ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অতিক্রম করবে। চাঁদের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -১১.৯, শনির ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -২.৩, এসময়ে চাঁদের দশা ৪০.১%।
এপ্রিল ১৬: চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহ সংযোগ
বৃহষ্পতি গ্রহ চাঁদের ২.০º উত্তর দিয়ে সকাল ১০:৩৪ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অতিক্রম করবে। চাঁদের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -১১.৫, শনির ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা ০.৬, এসময়ে চাঁদের দশা ৩৭.৯%।
এপ্রিল ২১: চাঁদ ও বুধ গ্রহ সংযোগ
বৃহষ্পতি গ্রহ চাঁদের ৩.১º উত্তর দিয়ে রাত ২৩:০৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অতিক্রম করবে। চাঁদের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -৮.২, শনির ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -০.৮, এসময়ে চাঁদের দশা ১.৯%।
এপ্রিল ২১-২২: লাইরিডস উল্কাবৃষ্টি
লাইরিডস উল্কাবৃষ্টি লাইরা বা বীণা নক্ষত্রমণ্ডলে ১৬-২৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেখা যাবে। তবে ২১-২২ এপ্রিল এর তীব্রতা বেশি থাকবে, এসময় ঘন্টায় ১৮টি উল্কার দেখা মিলতে পারে। এটি পৃথিবীর প্রাচীণতম পর্যবেক্ষিত উল্কাবৃষ্টি, চীনের ঐতিহাসিক নথিতে প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বে এটি অবলোকিত হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। ধূমকেতু থ্যাচারের ধ্বংসাবশেষ থেকে এর উৎপত্তি। ধূমকেতুটি প্রায় ৪১৫ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। আশা করা যায় আগামী ২২৭৬ সাথে ধূমকেতুটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হবে। এ বছরে লাইরিডস উল্কাবৃষ্টির সময় আকশে চন্দ্রালোক কম থাকায় ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
এপ্রিল ২৩: অমাবস্যা
অমাবস্যার ঘটার সময় দুপুর ১২:২৭ মিনিট (বাংলাদেশ সময়)। আকাশগঙ্গা ছায়াপথের গ্যালাকটিক সেন্টার বা ঘূর্ণায়মান কেন্দ্র এবং লাইরিডস উল্কাবৃষ্টি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সুযোগ পাবেন।
এপ্রিল ২৮: চাঁদ ও শুক্র গ্রহ সংযোগ
শনি গ্রহ চাঁদের ৬.০º উত্তর দিয়ে সন্ধ্যা ০৭:২৪ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অতিক্রম করবে। চাঁদের ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -১০.২, শনির ঔজ্জ্বল্যের মাত্রা -৪.৫, এসময়ে চাঁদের দশা ২৭.৩%।