সর্বশেষ:
ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

cosmicculture.science: বিজ্ঞানকে জানতে ও জানাতে
রবিবার ● ২৯ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ » একজন আরজ আলী মাতুব্বর
প্রথম পাতা » একজন আরজ আলী মাতুব্বর
৮৯৭ বার পঠিত
রবিবার ● ২৯ জুলাই ২০১২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

একজন আরজ আলী মাতুব্বর

আরজ আলী মাতুব্বরঅন্য পাঁচ দশটা গ্রাম্য শিশুর মতই জন্মের আড়ম্বরতাহীন পরিবেশে এক অতি সাধারণ দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম আরজ আলী মাতুব্বরের। সামান্য ভিটেবাড়ি ছাড়া উত্তরাধিকার সূত্রে তেমন কোন বিষয় সম্পত্তিই পাননি তিনি। বাবাকে হারান শিশুকালেই। নিজ গ্রামের মক্তবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে বেড়িয়ে পড়তে হয় কাজের সন্ধানে। বাবাকে হারিয়ে কৃষিকাজে লেগে যান কৃষক বালক আরজ আলী। কৃষিকাজের ফাঁকে শিখে নেন জমি মাপজোখের আমিনের কাজ। লাঙ্গল ছেড়ে এবার আমিনের পেছনে শেকলবাহী আরজ আলী। আস্তে আস্তে পাকা আমিন হয়ে ওঠেন তিনি। দূর দূরান্ত থেকেও আসতে থাকে জমি মাপার বায়না। নিখুঁত, নিরপেক্ষ, চুলচেরা সূক্ষ্ম মাপজোখ এবং নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকাতেই আরজ আলী মাতুব্বরের চাহিদা বেড়ে যায় এলাকার শহরেও। পিতৃহীন আরজ আলী মায়ের স্নেহেই বড় হচ্ছিলেন। বাংলা ১৩৩৯ সনে সেই মাকে হারিয়ে প্রচন্ড আঘাত পান তিনি। তখন আরজ আলী যৌবন পেরিয়ে। তার ইচ্ছা হলো মৃত মায়ের একটি ছবি তুলে রাখবেন। নিজেই ছুটে যান বরিশাল শহরে। বাড়ি থেকে বরিশাল শহরের দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। এই দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে শহর থেকে ক্যামেরাম্যান এনে মায়ের ছবি তোলালেন।এই ঘটনায় আপত্তি তুললেন এলাকার মোল্লারা। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মৃত ব্যক্তির ছবি তোলার অপরাধে তারা জানাজা নামাজে অংশ নেবেন না। বাধ্য হয়ে প্রায় বিনা জানাজায় কবরস্থ করতে হয় পরম পূজনীয় মায়ের লাশ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আরজ আলীর মন। প্রশ্ন, মৃত মায়ের ছবি তুলেছে ছেলে, সেই অপরাধে মায়ের শাস্তি কেন? মা কেন কবরে যাবেন জানাজা ছাড়া? সেই সঙ্গে মনে জাগে জগত ও জীবন নিয়ে নানা জিজ্ঞাসা। উত্তর খুঁজতে শুরু করেন পড়াশুনা। নানা বিষয়ে পড়াশুনা। ধর্ম, দর্শন, সমাজতত্ত্ব প্রভৃতি। এই ব্যাপক পড়াশুনা তার মনে জাগিয়ে তোলে আরও প্রশ্ন। আলোড়িত হন প্রশ্নবানে। কাগজে লিখে রাখেন তার প্রশ্নগুলো, এবার উত্তর খোঁজার পালা। কারও কাছ থেকে তেমন সাড়া না পেয়ে নিজেই আপন মনে করে চলেন সত্যের সন্ধান, আর এভাবেই লিখে ফেলেন তার প্রথম বই ‘সত্যের সন্ধান’। এটি বই আকারে প্রকাশিত হয় দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ এ। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। একে একে লিখে ফেলেন ‘সৃষ্টির রহস্য’, প্রকাশিত হয় ১৯৭৮ এ; ‘স্মরণিকা’, প্রকাশিত হয় ১৯৮২ এ। সবশেষে লেখেন ‘ভিখারির আত্মকথা’।
আরজ আলী মাতুব্বর কে বাংলা একাডেমীর সম্বর্ধনা। ছবি: সংগৃহীতআরজ আলী’র পরিচয় তার লেখার মধ্যেই। স্বশিক্ষিত এই দার্শনিক তার মেধা মননের ছাপ রেখেছেন তার বইয়ে। আরজ আলী উদার মানবতাবাদী মানসিকতার ধারক। কঠিন জীবন সংগ্রামে অকুতোভয় সংগ্রামী এবং সে সংগ্রামে বিজয়ী মহা মানুষ। পরিণত জীবনে সবকিছুর হিসাব-নিকাশে কোথাও কোন ফাঁক নেই, ফাঁকি নেই। সবখানে যেন সূক্ষ মাপের শেকল আর কাঁটা-কম্পাস। কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে একজন সাধারণ মানুষের এই স্বনির্মাণ প্রতিষ্ঠা লাভ বাঙালি মননে বিস্ময়কর হয়েই থাকবে।

গ্রন্থনা: কসমিক কালচার



আর্কাইভ

মহাবিশ্বের প্রারম্ভিক অবস্থার খোঁজেজেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের প্রথম রঙীন ছবি প্রকাশ
ব্ল্যাকহোল থেকে আলোকরশ্মির নির্গমন! পূর্ণতা মিলল আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের
প্রথম চন্দ্রাভিযানের নভোচারী মাইকেল কলিন্স এর জীবনাবসান
মঙ্গলে ইনজেনুইটি’র নতুন সাফল্য
শুক্র গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য নির্দেশকের সন্ধান লাভ
আফ্রিকায় ৫০ বছর পরে নতুনভাবে হস্তিছুঁচোর দেখা মিলল
বামন গ্রহ সেরেসের পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতার কারণ লবণাক্ত জল
রাতের আকাশে নিওওয়াইস ধূমকেতুর বর্ণিল ছটা,আবার দেখা মিলবে ৬,৭৬৭ বছর পরে!
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২০
মহাকাশে পদার্পণের নতুন ইতিহাস নাসার দুই নভোচারী নিয়ে স্পেসএক্স রকেটের মহাকাশে যাত্রা