বুধবার ● ৯ অক্টোবর ২০১৩
প্রথম পাতা » নোবেল পুরষ্কার:রসায়ন » রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টিকে সাইবার জগতে নিয়ে আসার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার
রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টিকে সাইবার জগতে নিয়ে আসার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার
রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টিকে সাইবার জগতে নিয়ে আসার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে রসায়নে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন বিট্রিশ ও মার্কিন নাগরিক মাইকেল লেভিট, মার্কিন-অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক মার্টিন কারপ্লাস এবং মার্কিন-ইসরায়েল নাগরিক এরিহ ওয়ার্শেল। তারা রাসায়নিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য কম্পিউটার সিম্যুলেশন উদ্ভাবন করেন। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস জানায়, রসায়নের রহস্যময় পদ্ধতিগুলোকে নিরূপণ করার ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে। আর রসয়নবিদদের কাছে কম্পিউটার এখন টেস্টটিউবের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
একসময় প্লাস্টিক বল বা কাঠি দিয়েই রসায়নবিদরা অণুর মডেল তৈরি করতেন। কিন্তু আজকের দিনে কাজটি কম্পিউটারে করা হয়ে থাকে। ১৯৭০ সালের দিকে মার্টিন কারপ্লাস, মাইকেল লেভিট এবং এরিহ ওয়ার্শেল রাসায়নিক কার্যকলাপ বোঝা এবং ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য শক্তিশালী প্রোগ্রাম চালু করেন। বর্তমানে বিভিন্ন কম্পিউটার মডেল বাস্তব জীবনেরই প্রতিচ্ছবি যা রসায়নের অগ্রগতির স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আলোর গতিতেই রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো ঘটে থাকে, এক মিলিসেকেণ্ডের ভগ্নাংশেরও কম সময়ে ইলেকট্রন একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের থেকে অন্য পরমাণুতে লাফ দেয়। বাস্তবে পরীক্ষামূলকভাবে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি ক্ষুদ্র ধাপ অনুসরণ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা রাসায়নিক প্রক্রিয়াসমূহ উদঘাটন করার জন্য এখন কম্পিউটার ব্যবহার করছেন, যেমন
প্রভাবকের পরিশোধন অথবা সবুজ পাতাদের সালোকসংশ্লেষণ।
কারপ্লাস, লেভিট এবং এরিহ ওয়ার্শেল এর কাজটি যুগান্তকারী কারণ তারা নিউটনের ক্ল্যাসিকাল পদার্থবিদ্যার সাথে মৌলিকভাবে ভিন্ন কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যাকেও কাজে লাগিয়েছেন। আগে রসায়নবিদরা এর যেকোন একটি ব্যবহার করতেন। ক্ল্যাসিকাল পদার্থবিদ্যার সুবিধা ছিল যে এর হিসাবগুলো সহজ এবং বৃহদাকার অণুদের মডেলে ব্যবহার করা যেতো। আর এটির দূর্বল দিকটি ছিল যে রাসায়নিক বিক্রিয়াসমূহ সিম্যুলেট করা যেতো না। এজন্য রসায়নবিদরা কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা ব্যবহার করতেন। তবে এক্ষেত্রে প্রচুর গণনার প্রয়োজন পড়তো, আর এজন্য ছোট অণূদের ক্ষেত্রেই এটি ব্যবহৃত হতো।
এবছর রসায়নে নোবেলজয়ীরা এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যেখানে ক্ল্যাসিকাল পদার্থবিদ্যা ও কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা উভয়কেই ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কোন একটি ওষুধ কিভাবে শরীরের মধ্যের উদ্দিষ্ট প্রোটিনের সাথে মিথস্ক্রিয়া ঘটাবে তা কম্পিউটারে কোয়ান্টাম তাত্ত্বিক হিসাব দ্বারা করে দেখানো সম্ভব। সিম্যুলেশন এতোটাই বাস্তবসম্মত যে তারা প্রথাগত পরীক্ষা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম।
সম্পাদনা: কসমিক কালচার
৯ অক্টোবর, ২০১৩