বৃহস্পতিবার ● ১৯ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: বাংলাদেশ প্রবাহ » আকাশে আজ দুপুরে সূর্যের রংধনু বলয় দেখা গিয়েছে
আকাশে আজ দুপুরে সূর্যের রংধনু বলয় দেখা গিয়েছে
সূর্যগ্রহণ অনেকের কাছেই এখন পরিচিত। সূর্যের আংশিক, পূর্ণ ও বলয় গ্রহণ বিভিন্ন সময়ে নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলে দৃশ্যমান হয়। তবে সূর্যের রংধনু বলয় খুব একটা দৃশ্যমান নয় এবং অনেকের কাছেই অপিরিচিত।
আমাদের বায়ুমণ্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ারে অলক-স্তুপ মেঘ বা পালকপুঞ্জ মেঘ (cirrus clouds) রয়েছে। এই শ্রেণির মেঘ হল উর্দ্ধাকাশের মেঘ অর্থাৎ অধিক উচ্চতার মেঘ। এই মেঘ গুচ্ছাকার সাদা ঢেউয়ের মতো আকাশে ভেসে বেড়ায়। ছবিতে লক্ষ্য করবেন যে আকাশ মোটামুটি পরিষ্কার দেখাচ্ছে। সর্বোপরি, আপনি সূর্য দেখতে পারেন। এই মেঘগুলিতে কয়েক মিলিয়ন ক্ষুদ্র বরফের স্ফটিক রয়েছে। এই বরফের স্ফটিকগুলি থেকে প্রতিসরণ বা আলোর বিভাজন এবং প্রতিফলন বা আলোর প্রতিবিম্বের কারণে সূর্যের চারপাশে আলোর বলয় আকারে দৃশ্যমান হয়। এই বিশেষ বলয়কে জ্যোতির্বিদরা ‘হ্যালো’ বা Halo (গ্রীক halōs থেকে উদ্ভূত) নামকরণ করেছেন। হ্যালো ২২ ডিগ্রি থেকে ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে। তবে সূর্যের চারিদিকে বলয়ের ব্যাসার্ধ ২২ ডিগ্রি হলেই এই বলয় সবচেয়ে উজ্জ্বলভাবে দৃশ্যমান হয়। একারণে একে ‘২২-ডিগ্রী হ্যালো’ও বলা হয়। এই বলয়ে থাকে নানা রকমের রঙ। তাই একে সূর্যের রংধনু বলয় হিসেবে মনে হয়।
হ্যালোগুলি আমাদের মাথার উপরে ২০,০০০ ফুট বা তারও বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত পাতলা পালকপুঞ্জ মেঘের চিহ্ন। এটি চাদেঁর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। আবহাওয়া সম্পর্কে পুরানো একটি প্রচলণ রয়েছে: চাঁদের চারদিকে বলয় মানে শীঘ্রই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। এই কথার সত্যতা হলো অলক-স্তুপ মেঘ বা পালকপুঞ্জ মেঘ (cirrus clouds) প্রায়ই ঝড়ের আগে আসে। তবে বরফ স্ফটিক ছাড়াও জলের গায়েও সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত হতে পারে, যা ৪৬ ডিগ্রী হিসেবে দিগন্তে অবস্থান করে এবং বৃষ্টির পর পরেই সূর্যের বিপরীত দিকে চির-পরিচিত রংধনু হিসেবে দেখা যায়।
আজ দুপুর আনুমানিক একটার দিকে বা ঢাকা, বরিশালসহ দেশের কয়েক স্থান থেকে আকাশে এই বিরল দৃশ্য দেখা গিয়েছে। এটি একটি সাধারণ মহাজাগিতক বিষয় এবং কোনপ্রকার ক্ষতিকর প্রভাব নেই। তবে সূর্যের এই অভুতপূর্ব দৃশ্য দেখার জন্য কখনোই খালি চোখে তাকাবেন না, উপযুক্ত ফিল্টার ছাড়া (সাধারণ রোদ-চশমাও নয়) সূর্যের দিকে তাকানো চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।