বৃহস্পতিবার ● ২৩ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: জীববিদ্যা ও বিবর্তন » অজগর শিকারকে হৃদযন্ত্র বন্ধ করে মারে
অজগর শিকারকে হৃদযন্ত্র বন্ধ করে মারে
অজগর শিকারকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে এমনটা পূর্বে ধারণা করা হলেও বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি দেখিয়েছেন যে, অজগর শিকারের রক্ত সংবহনন্ত্র কেটে ফেলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বিকল করতে তরান্বিত করে। এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রবন্ধ ‘জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি’ তে প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অজগর প্রথম ছোবলেই ইঁদুরকে অবশ করে ফেলে। তারপর কমপক্ষে দুই পাক দিয়ে তাদের আবদ্ধ করে ফেলে এবং পাজর বা উদরে চাপ প্রয়োগ করে।
মার্কিন গবেষকরা ইঁদুরের রক্তচাপ ও হৃদকম্পন পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন যে, রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হওয়ার সেকেন্ডের মধ্যে ইঁদুরের হৃদকম্পন অস্বাভাবিক হয়ে যায়। পেনসিলভেনিয়ার ডিকিনসন কলেজের সাপ গবেষক স্কট বোব্যাক বলেন, সাপ পেচিয়ে ধরার পরে মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হওয়ায় শিকারের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
অজগর এবং বোয়া উভয়ের ক্ষেত্রেই মনে করা হতো তারা শিকারকে শ্বাসরোধ করে মারে। কিন্তু বাস্তবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শিকারের মৃত্যু ঘটে। বোব্যাক বলেন, এটা হালকাভাবে নেয়ার মতো না এবং আমরা নিশ্চিত হতে চেয়েছিলাম যে মৃত্যুকালে শিকার (ইঁদুর) ব্যাথা বা কষ্ট পায় কিনা। বোব্যাক গবেষণার স্বার্থে তার গবেষণাগারে অর্ধশত বোয়ার কলোনী গড়ে তুলেছেন।
তিনি আরও যোগ করেন, আমরা দেখতে পেয়েছি শিকার ধরার পরে সাপ প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ইঁদুর সাপের আক্রমনের শিকার হয়ে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হওয়ায় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয় এবং হৃদকম্পন অস্বাভাবিক হয়ে যায়। সাপ তার শক্তি অপচয় কমাতে হৃদপিন্ড অচল হয়েছে নিশ্চিত হয়েই কুণ্ডলী থেকে শিকারকে ছেড়ে দেয়।
১৯২৮ সালে অ্যান্টিভেনিন ইনস্টিটিউট অব আমেরিকা প্রকাশিত একটি বুলেটিনে গবেষক ফ্যাঙ্ক ম্যাকলিস অজগর এবং বোয়া সাপ তার শিকারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। পরবর্তীতে ড. বোব্যাকের বন্ধু প্রাণীবিদ ডেভ হার্ডি ১৯৯৪ সালে দাবি করেন শ্বাসরোধ কখনও হত্যার কৌশল হতে পারে না। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো বিষয়টি গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হলো।
সূত্র: ডেইলী মেইল
২৩ জুলাই, ২০১৫