শনিবার ● ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » বিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা ও বিজ্ঞান চেতনা » বিবর্তনের পথে ইতিহাসের বাঁকে - আসিফ
বিবর্তনের পথে ইতিহাসের বাঁকে - আসিফ
তাম্রলিপি থেকে প্রকাশিত
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০১৫
প্রচ্ছদ: যোয়েল কর্মকার
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৪৮
মূল্য: চারশত টাকা
ISBN: 984-70096-0296-2
সক্রেটিসের সময় থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত সমগ্র ইতিহাসের অধ্যায় জুড়ে, মানুষ বারবার জীবনের দুটো মৌলিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে তাহলো আমরা কে এবং কেন আমরা এখানে? ফেলে আসা অতীত আর অজানা ভবিষৎতের চক্রে আটকে পড়া মানবসত্ত্বা এ চক্রে ঘুরপাক খেয়েছে অনবরত। মানুষ চিরন্তন এক অনুসন্ধিৎসু প্রাণী। তাই তাদের চলার পথ ও উপলব্ধি অন্বেষণের গতি কখনো থেমে থাকেনি। প্রাচীন মানবেরা যখন তৃণভূমির অঞ্চলে ছিল অথবা খোলা প্রান্তরে ছুটেছিল তখনও তারা ভেবেছিল, যখন সে সমুদ্রের ধারে দাঁড়িয়ে বিশালতায় বিস্মিত হতো, পাহাড়ি গিরিখাতে বা গভীর জঙ্গলে পাগলের মতো ঘুরে বেড়াতো খাবারের সন্ধানে তখনও তারা ভেবেছিল, ভেবেছিল এই চক্র থেকে উত্তরণের উপায়।
ইউক্লিড, আর্কিমিডিস থেকে হাইপেশিয়া, ওমর খৈয়াম ও ইবনে সিনা, আল বেরুণী, কোপার্নিকাস ও গ্যালিলিও এবং শেক্সপিয়র ও লিওনার্দোদের মত মহান আবিষ্কারক ও স্রষ্টাদের রচনা ও কর্মকাণ্ড আমাদের চলার গতিকে অব্যাহত রেখেছে। বিজ্ঞান ও মানবিকবিদ্যার অর্জনগুলো ধাবিত করেছে সুবিস্তৃত পৃথিবীর দিকে। তবুও মেলেনি সে উত্তর। কিন্তু নিজেদের অজান্তে মানুষ সরে গিয়েছে ‘কেন’ থেকে ‘কীভাবে’র দিকে, সরে গিয়েছে উদ্দেশ্যে থেকে কারণ অনুসন্ধানের দিকে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির দিকে তাকালে আমরা দেখি শিল্পকলা ও বিজ্ঞান সবসময় হাতধরাধরি করে চলেছে। তা গ্রিসের স্বর্ণযুগ, আলেক্সান্দ্রিয়া অথবা রেঁনেসার সময়ই হোক অথবা সপ্তদশ শতাব্দীই হোক। ইতিহাসের সব জায়গায় বিজ্ঞানকে জীবনের অঙ্গ করেই ছুটেছে। যখনই তারা বিচ্ছিন্ন হয়েছে তখনই দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বর্তমান সময় শিল্প ও বিজ্ঞানের সেই অন্তর্গত ঐক্যেরই উত্তরাধিকার।
অন্ধকার, অজ্ঞতা, হিংসা আর বর্বরতার ভেতর থেকেই বেরিয়ে এসেছে সভ্যতা আর মানবতার আলো। প্রতিনিয়ত সংঘাতের মধ্যদিয়েই এর পথচলা এবং উত্তরণ। তাই আজকের এ সময়টি যত অন্ধকার তমসাচ্ছন্ন বা হিংস্রই মনে হোক না কেন এইটিই আগামী সকালে বার্তা, পূর্বাভাষ। বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞান বক্তৃতায় প্রশ্ন প্রতিপ্রশ্নোত্তরের মধ্যে দিয়ে লেখকের যে সব অভিজ্ঞতা হয়েছে সেখানে বিজ্ঞান, কলা, ধর্ম কোনোটাই বাদ পড়েনি। একটির ব্যাখ্যায় অন্যটি স্বাভাবিকভাবেই চলে এসেছে।
বর্তমান হলো সামাজিক বিজ্ঞানের যুগ। এটা আমাদের বুঝিয়েছে মানুষকে পরিচালনা করতে হবে ইতিহাসের শক্তিতে। এটাই আমাদের বলছে নম্রতা ও ভদ্রতার কথা, যা মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় একটি প্রধান কৌশলে পরিণত হতে যাচ্ছে যদি আমাদের টিকে থাকতে হয়। মস্তিষ্ক বিকাশের দিকে তাকালেও আমরা বুঝতে পারি এটা আমাদের হাজার হাজার বছরের অর্জন। এতকাল মানুষ নিজের ভিতর পশু প্রবৃত্তিকে দমনের আইন তৈরি করেছে। আজ মানুষ নিজের ভিতর দেবশক্তির উদ্বোধনে পিছপা হবে না; ইতিবাচক চিন্তায় জীবন পরিবার, সময় ও জাতির ভাগ্যে যে পরিবর্তন করা যায়, সে বিশ্বাস আজ বাংলাদেশের হাজার মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। এই বইটিতে সেই বিশ্বাসকেই ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন লেখক। বইটি বিজ্ঞানমনস্ক সকলের জন্য সুখপাঠ্য।