সোমবার ● ৬ অক্টোবর ২০১৪
প্রথম পাতা » নোবেল পুরষ্কার: চিকিৎসা » মস্তিষ্কের ‘অভ্যন্তরীন জিপিএস’ ব্যবস্থা আবিস্কারের জন্য ২০১৪ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল
মস্তিষ্কের ‘অভ্যন্তরীন জিপিএস’ ব্যবস্থা আবিস্কারের জন্য ২০১৪ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল
আমরা কিভাবে জানতে পারি যে আমরা কোথায় রয়েছি? কিভাবেই বা আমরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওযার রাস্তা খুঁজে পাই? কিংবা একই পথে পুনরায় চলার ক্ষেত্রে কিভাবে দ্রুততার সাথে পথ খুঁজে পাওয়ার তথ্য মস্তিস্কে ধারণ করে রাখি? এই অবস্থানগত সিস্টেমের বা মস্তিষ্কের ‘অভ্যন্তরীন জিপিএস’ ব্যবস্থা আবিস্কারের জন্য ২০১৪ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন গবেষক অধ্যাপক জন ও’কিফি (John O´Keefe) এবং নরওয়েজিয়ান দম্পতি মে-ব্রিট মসার (May-Britt Moser) এবং এডভার্ড আই. মসার (Edvard I. Moser)।
জন ও’কিফি ১৯৭১ সালে সর্বপ্রথম এই পজিশনিং সিস্টেমের প্রথম উপাদানটি আবিস্কার করেন। তিনি ইদুরের ওপর গবেষণা চালানোর সময় খুঁজে পেয়েছিলেন যে মস্তিস্কের মধ্যে হিপ্পোক্যাম্পাস নামে একটি বিশেষ জায়গায় এক ধরনের স্নায়ু কোষ রয়েছে, যা কোন রুমের নির্দিষ্ট জায়গায় ইদুরটির অবস্থানকালীন সময়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে। আবার অন্য স্নায়ু কোষগুলো ইদুরটির জায়গা বদল করে অন্যত্র অবস্থানকালীন সময়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে। ও’কিফি সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে এই ‘প্লেস (place)’ কোষগুলো ইদুরের মস্তিস্কে রুমের একটি মানচিত্র গঠন করে।
এর প্রায় তিন দশক পরে ২০০৫ সালে মে-ব্রিট মসার ও এডভার্ড আই মসার মস্তিস্কের পজিশনিং সিস্টেমের অপর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আবিস্কার করেন। তারা এই নতুন আবিস্কৃত কোষটির নাম দেন ‘গ্রিড (grid) কোষ’, যা একটি সমন্বিত সিস্টেম উৎপাদন করে এবং পথ অনুসন্ধানে ও অবস্থান নির্ণয়ে নির্ভুলভাবে নির্দেশনা দেয়।
জন ও’কিফি এবং মে-ব্রিট মসার ও এডভার্ড আই মসার এর এই আবিস্কার দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের শতাব্দীকালের সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে - কিভাবে মস্তিস্ক আমাদের চারপাশের স্থান সম্পর্কে মানচিত্র তৈরি করে এবং কোন জটিল পরিবেশে কিভাবে আমরা পথ খুঁজে পাই? এছাড়া কেনইবা আলঝেইমার আক্রান্ত মানুষ তাদের চারপাশের জিনিস চিনতে পারে না-তা জানতেও এই আবিষ্কার সহায়তা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিষয়: #চিকিৎসাবিজ্ঞান #চিকিৎসাশাস্ত্র #নোবেল #২০১৪ সাল