বুধবার ● ১৪ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: বিশ্ব পরিক্রমা » পদার্থবিদ্যার ইতিহাসে অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং আর নেই
পদার্থবিদ্যার ইতিহাসে অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং আর নেই
পদার্থবিদ্যার ইতিহাসে অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং ১৪ মার্চ ২০১৮, বুধবার সকালে ৭৬ বছর বয়সে কেমব্রিজের নিজ বাসভবনে মারা যান। তার পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। হকিং এর জন্ম-মৃত্যু অনেকটাই প্রকৃতির খেয়ালীপনা, কারণ বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর মৃত্যুর ঠিক ৩শ’ বছর পর জন্ম হয়েছিল স্টিফেন হকিংয়ের, আর তিনি মারা যান বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ১৩৯তম জন্মদিনে।
তার জন্ম ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে। তার বাবা ছিলেন একজন জীববিজ্ঞানের গবেষক। জার্মানি থেকে তারা পালিয়ে যান লন্ডনে । স্টিফেন হকিং বড়ো হন লন্ডন ও সেন্ট এ্যালবানসে। অক্সফোর্ডে পদার্থবিদ্যার ওপর প্রথম শ্রেণীর ডিগ্রী অর্জন করে ক্যামব্রিজে কসমোলজির ওপর স্নাতকোত্তর গবেষণা করেন তিনি। কেমব্রিজে গবেষণা করার সময় তার মোটর নিউরন রোগ ধরা পড়ে যেটা তাকে প্রায় সম্পূর্ণভাবে অচল করে দেয়। ১৯৬৪ সালে যখন তিনি তার প্রথম স্ত্রী জেনকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন চিকিৎসকরা বলে দেন তিনি বড় জোর দুই থেকে তিন বছর বাঁচবেন। কিন্তু রোগটি যতটা দ্রুততার সঙ্গে ছড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছিল তার চেয়ে কম গতিতে ছড়ায়। ১৯৮৮ সালের মধ্যে হকিং এর অবস্থা এমন হল যে শুধু কৃত্রিম উপায়ে কথা বলতে পারতেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করতেন যে তার অসুস্থতা তার জন্য কিছু উপকারও এনে দিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, অসুস্থ হবার আগে তিনি জীবন নিয়ে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। অবশ্য তার শারীরিক অবস্থা অবধারিতভাবেই তাকে অন্যদের ওপর নির্ভরশীল করে তোলে। তিনি প্রায় সময়ই তার প্রথম স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা বলতেন। যিনি ২০ বছরেরও বেশি তার দেখাশোনা করেছেন। যদিও তিনি যখন তার একজন নার্সের জন্য প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্কোচ্ছেদ করেন তখন তার বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনরা বেশ অবাক হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে তিনি তার সাবেক নার্সকে বিয়ে করেন।
২০০৭ সালে তিনি প্রথম চলৎশক্তিহীন ব্যক্তি হিসেবে একটি বিশেষ বিমানে ওজনশূন্যতার অভিজ্ঞতা নেন। মানুষকে মহাকাশ ভ্রমণে উৎসাহ দেয়ার জন্যই তিনি এটি করেছেন বলে জানান। তখন হকিং বলেন, আমার বিশ্বাস পারমাণবিক যুদ্ধ, জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে তৈরি ভাইরাস অথবা অন্য কোন কারণে পৃথিবীতে প্রাণের অবসান হতে পারে। মানুষ যদি মহাকাশে না যায় তাহলে আমার মনে হয় মানব জাতির কোন ভবিষ্যত নেই। যে কারণে আমি মানুষকে মহাকাশে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে চাই। ২০১৪ সালে স্টিফেন হকিংয়ের জীবন নিয়ে তৈরি হয় ‘থিওরি অব এভরিথিং’ চলচ্চিত্র।
স্টিফেন হকিং প্রিন্স অব অস্ট্রিয়ান্স পুরস্কার, জুলিয়াস এডগার লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার, উলফ পুরস্কার, কোপলি পদক, এডিংটন পদক, হিউ পদক, আলবার্ট আইনস্টাইন পদক অর্জন করেছিলেন।
১৪ মার্চ ২০১৮
সূত্র: বিবিসি