বৃহস্পতিবার ● ২ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: বিশ্ব পরিক্রমা » ক্রিকেটের ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি বা বৃষ্টি আইনের যুগ্ম প্রবক্তা গণিতবিদ টনি লুইস আর নেই
ক্রিকেটের ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি বা বৃষ্টি আইনের যুগ্ম প্রবক্তা গণিতবিদ টনি লুইস আর নেই
বৃষ্টি-বিঘ্নিত ক্রিকেট ম্যাচে পরে ব্যাটিং করা দলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করার প্রধান মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি। তবে টেস্ট নয়, একদিনের বা টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই শুধু ব্যবহার হয় এই পদ্ধতি। ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সঙ্গে জুটি বেঁধে টনি লুইস ১৯৯৭ সালে প্রবর্তন করেন ডি-এল মেথড। টনি লুইস গত ১ এপ্রিল পরলোকগমন করেন।
১৯৪২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ল্যাঙ্কাশায়ারের বোল্টনে জন্মগ্রহণ করেন টনি লুইস। তার পুরো নাম এন্থনি জন লুইস। ষাটের দশকে শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত এবং পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন লুইস। পেশাজীবনে গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডে শিক্ষকতা করানোর সময়ই তিনি ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি বা বৃষ্টি আইনের উদ্ভাবন করেন। তার সহকর্মী সহকর্মী ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এখনও পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে ল্যাঙ্কাশায়ারে কর্মরত আছেন।
ডাকওয়ার্থ অবশ্য ৮০-র দশক থেকেই বৃষ্টি-বিঘ্নিত ম্যাচ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। তবে সে সময়ে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা তাঁকে পাত্তা দেননি। পরে ১৯৯২ সালে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল সোসাইটির কনফারেন্সে ‘ফেয়ার প্লে ইন ফাউল ওয়েদার’ নামের একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন ডাকওয়ার্থ। ব্রিস্টলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডের ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানের সেই সময়ের লেকচারার লুইসও উপস্থিত ছিলেন সেই কনফারেন্সে। ডাকওয়ার্থের প্রবন্ধে মুগ্ধ লুইস একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন।
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ ঘটে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে বনাম ইংল্যাণ্ডের মধ্যকার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজে। ঐ খেলায় জিম্বাবুয়ে ৭ রানে জয়ী (ডি/এল মেথড) হয়। ২০০১ সালে ক্রিকেট খেলার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি এ পদ্ধতি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। ২০১৪ সালে দুই গণিতজ্ঞের সঙ্গে আইসিসির অধিগৃহীত নিয়মে যোগ হয় স্টিভেন স্টার্নের নাম। সেই থেকে এই নিয়ম ডিএলএস নামে পরিচিত। যদিও এখনও পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ-লুইস নামেই ডাকা হয়ে ক্রিকেটের জটিল এই গাণিতিক নিয়মকে।
উল্লেখ্য, ক্রিকেট ও গণিতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১১ সালে টনি লুইসকে রাণীর জন্মদিনের সম্মানে মেম্বার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার বা এমবিই মনোনীত হন।
সূত্র: বিবিসি, ইএসপিএন