সর্বশেষ:
ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

cosmicculture.science: বিজ্ঞানকে জানতে ও জানাতে
শুক্রবার ● ২৪ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: রসায়ন » গবেষণাগারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণক্ষম খনিজ পদার্থ তৈরি
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: রসায়ন » গবেষণাগারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণক্ষম খনিজ পদার্থ তৈরি
৮১৫ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৪ আগস্ট ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

গবেষণাগারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণক্ষম খনিজ পদার্থ তৈরি

প্রাকৃতিকভাবে ম্যাগনেসাইট সৃষ্টিতে হাজার বছরেরও বেশি সময় প্রয়োজন। এখন বিজ্ঞানীরা কয়েক মাসের মধ্যে গবেষণাগারেই ম্যাগনেসাইট বা ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট তৈরির কৌশল খুঁজে পেয়েছেন। ছবি সূত্র: সায়েন্স নিউজ
খনিজ পদার্থে কাবর্ন-ডাই-অক্সাইড ধরে রাখার প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানীরা আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন। নতুন একটি কৌশল ম্যাগনেসাইট নামের এই খনিজ উৎপাদন প্রক্রিয়া তরান্বিত করছে, যা গ্রীণ হাউজ গ্যাস কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে ধারণ ও মজুদ করে রাখতে সক্ষম। এই প্রক্রিয়াটি কক্ষ তাপমাত্রায় গবেষণাগারেই করা সম্ভব বলে গোল্ডস্মিথ জিওকেমিষ্ট্রি কনফারেন্সে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যদি এই খনিজটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উৎপাদন করা সম্ভব হয়, তাহলে এই প্রক্রিয়ায় একদিন জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
“কার্বনেট খনিজ যেমন চুনা পাথর হিসেবে প্রচুর পরিমাণ কার্বন পৃথিবীতে এরই মধ্যে মজুদ হয়ে আছে।পৃথিবী জানে কীভাবে প্রাকৃতিকভাবে কার্বন মজুদ করে রাখতে হয় এবং ভৌগলিক সময়ে এটি ঘটে থাকে। কিন্তু আমরা এতো বেশি পরিমাণে কার্বন নিঃসরণ করছি যা পৃথিবীর পক্ষে ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না” এমনটি বলছিলেন পরিবেশ ভূতত্ত্ববিদ ইয়ান পাওয়ার।
গবেষকরা পৃথিবীর কার্বন-ডাই-অক্সাইড মজুদের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর উপায় খুঁজছিলেন। একটি সম্ভাব্য উপায় হলো: কার্বনেট খনিজ হিসেবে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে আটকে ফেলা। ম্যাগনেসাইট বা ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট হলো একটি স্থিতিশীল খনিজ যা প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ধরে রাখতে পারে। এক মেট্রিক টন ম্যাগনেসাইট প্রায় অর্ধেক মেট্রিক টন গ্রীণ হাউজ গ্যাস ধারণ করতে পারে। কিন্তু ম্যাগনেসাইট দ্রুত তৈরি করা সম্ভব নয়। এর আগে গবেষকরা কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে চাপ প্রয়োগ করে পৃথিবীর অভ্যন্তরে পাঠিয়ে দেওয়ার বিষয়টি ভেবেছিলেন, যেখানে উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপে অলিভিন নামক ম্যাগনেসিয়াম ধারণকৃত খনিজের সাথে গ্যাসের রাসায়নিক বিক্রিয়া তরান্বিত হতো। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে অনেক সমস্যা দেখা দেয়।
আরেকটি উপায় ছিল গবেষণাগারে ম্যাগনেসাইট উৎপন্ন করা। কিন্তু কক্ষ তাপমাত্রায় তা উৎপাদন অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। অতি উচ্চ চাপে বিজ্ঞানীরা দ্রুত ম্যাগনেসাইট উৎপাদন করতে পারেন কিন্তু এই পদ্ধতিতে প্রচুর শক্তি প্রয়োজন এবং এটি অত্যধিক ব্যয়বহুল।
দ্রুত ম্যাগনেসাইট উৎপাদনের সমস্যা খুঁজতে গিয়ে পাওয়ার-এর গবেষক দল দেখলেন, পানি এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে। গবেষণাগারে এই খনিজ উৎপাদনের লক্ষ্যে তারা পানির মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম রাখলেন। যখন ম্যাগনেসিয়াম আয়ন পানির মধ্যে থাকে তখন পানির অণু এই আয়নগুলোকে ঘিরে ফেলে। পানির অণুর এই আবরন ম্যাগনেসিয়াম আয়নকে কার্বনেটের সাথে বন্ধন তৈরি করে ম্যাগনেসাইট উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। পানির এই অণুগুলোকে বিচ্ছিন্ন করাটাই কঠিন কাজ। এই কারণে ম্যাগনেসাইট উৎপাদন পক্রিয়া শ্লথ গতির।
এই সমস্যা সমাধানে তারা হাজার হাজার ক্ষুদ্র পলিস্টাইরিন মাইক্রোস্ফিয়ার ব্যবহার করেছিলেন, যার প্রতিটির ব্যাস ছিল প্রায় ২০ মাইক্রোমিটার। এগুলো বিক্রিয়া তরান্বিত করতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। মাইক্রোস্ফিয়ারগুলো কার্বক্সিল অণু দ্বারা আবৃত, এই অণুগুলো ঋণাত্মক চার্জ হওয়ায় পানির অণুকে ম্যাগনেসিয়াম থেকে দূরে ঠেলে রাখে এবং কার্বনেট আয়নের সাথে বন্ধন তৈরিতে বাধা প্রদান করে। পাওয়ারের গবেষকদলটি এই পদ্ধতিতে প্রায় ৭২ ঘণ্টায় ম্যাগনেসাইট তৈরিতে সক্ষম হন।
পাওয়ার বলেন, এর ফলাফল এই নয় যে আমরা একদম লক্ষে পৌছেঁ গেছি। আমরা গবেষণাগারে যে ম্যাগনেসাইট তৈরি করেছি তা অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে। বৃহৎ পরিমাণে বা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের কৌশল বের করা এখনও অনেক সময়ের ব্যাপার।
তবে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী এই প্রক্রিয়ায় তারা একসময় যথেষ্ট সফলতা লাভ করবেন এবং বাণিজ্যিকভাবে গবেষণাগারেই ম্যাগনেসাইট উৎপাদিত হবে।

২৪ আগস্ট ২০১৮
সূত্র: সায়েন্স নিউজ




আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
মহাবিশ্বের প্রারম্ভিক অবস্থার খোঁজেজেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের প্রথম রঙীন ছবি প্রকাশ
ব্ল্যাকহোল থেকে আলোকরশ্মির নির্গমন! পূর্ণতা মিলল আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের
প্রথম চন্দ্রাভিযানের নভোচারী মাইকেল কলিন্স এর জীবনাবসান
মঙ্গলে ইনজেনুইটি’র নতুন সাফল্য
শুক্র গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য নির্দেশকের সন্ধান লাভ
আফ্রিকায় ৫০ বছর পরে নতুনভাবে হস্তিছুঁচোর দেখা মিলল
বামন গ্রহ সেরেসের পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতার কারণ লবণাক্ত জল
রাতের আকাশে নিওওয়াইস ধূমকেতুর বর্ণিল ছটা,আবার দেখা মিলবে ৬,৭৬৭ বছর পরে!
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২০
মহাকাশে পদার্পণের নতুন ইতিহাস নাসার দুই নভোচারী নিয়ে স্পেসএক্স রকেটের মহাকাশে যাত্রা