সর্বশেষ:
ঢাকা, মে ১৪, ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১

cosmicculture.science: বিজ্ঞানকে জানতে ও জানাতে
মঙ্গলবার ● ১ অক্টোবর ২০১৩
প্রথম পাতা » মঙ্গলে আবাস » মার্স ওয়ান মিশন সম্পর্কে বিজ্ঞানকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের মতামত
প্রথম পাতা » মঙ্গলে আবাস » মার্স ওয়ান মিশন সম্পর্কে বিজ্ঞানকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের মতামত
৫২০ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১ অক্টোবর ২০১৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মার্স ওয়ান মিশন সম্পর্কে বিজ্ঞানকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের মতামত

মার্স ওয়ান মিশনএক দশকে মঙ্গলে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এর ভিত্তিতে মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছিল। পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছিল। তবে মার্স ওয়ান মিশনের ঘোষণা পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। মঙ্গলে বসতি স্থাপনের জন্য তাদের আহ্বানে মাত্র চার মাসের মধ্যেই লক্ষাধিক আবেদনপত্র জমা পড়ে। বাংলাদেশ থেকেও ১৮ জন অংশগ্রহণ করেন। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে মাত্র ৪০ জনকে পর্যায়ক্রমে ২১০ দিনের যাত্রায় তারা ২০২৩ সালে মঙ্গলে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশে বিজ্ঞানচর্চা ও আন্দোলনের সঙ্গে যারা জড়িত, এ ব্যাপারে তাদের মনোভাব জানতে চাওয়া হয়। তাই নিয়ে এই সাক্ষাৎকার প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন যোয়েল কর্মকার।

ড. আলী আসগর, পদার্থবিজ্ঞানী

পৃথিবীর বাইরে সদৃশ গ্রহ হিসেবে মঙ্গলকেই বিবেচনা করা যায়, যেখানে হয়তো প্রাণের বিকাশ ঘটানো সম্ভব হবে। সেখানে অক্সিজেন বা বাসযোগ্য পরিবেশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি ঠিকই, কিন্তু বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টিতে বা পৃথিবীর বাইরে বসতি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে এই অভিযানটি বৈজ্ঞানিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে এই অভিযান আমাদের সৌরজগৎ সম্পর্কে আরও জানার সুযোগ করে দেবে। পৃথিবীতে দলবদ্ধ হয়ে বেঁচে থাকলেও মহাকাশে প্রজাতি হিসেবে আমাদের টিকে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করবে এই অভিযান। সাধারণ চোখে এই অভিযানটিকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল উদ্যোগ মনে হলেও পৃথিবীতে যুদ্ধ ও ধ্বংসাত্মক কাজের জন্য আমরা এর চেয়ে বেশি অর্থ অপচয় করে থাকি। আমি মনে করি, যখন আমরা পৃথিবীর বাইরে অবস্থান করব তখন আমরা আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারব যে, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পৃথিবী কতটা সহায়ক এবং একে রক্ষা করা কতটা জরুরি।

এফ আর সরকার শৌখিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি

আমার কাছে বিষয়টি অত্যন্ত অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। কারণ মঙ্গলে বেঁচে থাকার মতো কোনো অনুকূল পরিবেশ নেই। হয়তো স্বল্পমেয়াদি অভিযান চালানোর জন্য মঙ্গলে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে সেখানে চিরস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করা নিতান্তই অযৌক্তিক। তাছাড়া মঙ্গলের পরিবেশে মানুষের পক্ষে খাপ খাইয়ে নেওয়া সম্ভব হবে কি-না এ ধরনের পরীক্ষা এখনও করা হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে নাসা পরিদর্শন করে ও বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলোচনা করে যে ধারণা পেয়েছি, তাতে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো মনুষ্যবাহী মহাকাশযান সেখানে পরীক্ষার জন্য পাঠানো সম্ভব হবে। যারা আবার নির্ধারিত সময় পরে পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

ড. খন্দকার সিদ্দীক-ই-রাব্বানী, অধ্যাপক, জীবপদার্থবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় আমি মনে করি এখনই এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার সময় আসেনি। যখন পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই প্রযুক্তিগত বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত, তখন প্রযুক্তিকে মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য ব্যবহার করাটা যুক্তিসঙ্গত নয় মোটেই। পাশ্চাত্যের দেশগুলো বরাবরই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে কুক্ষিগত করতে চেয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানের ব্যবহার সার্বজনীনভাবে না হলে সামগ্রিক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। সেই বিবেচনায় আমাদের পৃথিবীবাসীর জীবনের মানোন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিকে কীভাবে আরও জীবনঘনিষ্ঠ করে তোলা সম্ভব সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন।

মশহুরুল আমিন, জ্যোতির্বিজ্ঞান কর্মী, অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন

গ্রিক উপকথা ইকারাস-ডিদালাস এর আকাশে উড়বার তাড়নায় আমরা তাড়িত হই। আজ আমাদের নীল আকাশের উপরে গাড় কালো মহাকাশ পাড়ি দেবার আহ্বানে সাড়া দেয়া মানুষগুলো আমাকে আমাদেরকে তাড়িত করে, অজানাকে জানবার। মনে হতে পারে এ আর এমন কি? ভেবে দেখুন জানাশোনা ওই সবুজের বুকে হেটে বেড়ানো থেকে নিজেকে চিরদিনের মতো বঞ্চিত করে চলে যেতে চাওয়া, অসম্ভব! আর এভাবেই মানুষ ফেলে আসা দিন থেকে আজ অবধি বিজ্ঞানের বিকাশে নিজেকে উৎসর্গ করে আসছে। বিজ্ঞানের বিকাশের পথ ধরেই গুহাবাসী মানুষ মঙ্গলে বসবাসের আয়োজন করছে।

খালেদা ইয়াসমিন ইতি, লেখক ও বিজ্ঞান কর্মী, ডিসকাশন প্রজেক্ট 

১০০ বছর আগেও মঙ্গল এক অজানা জগৎ, গল্পগাথা ছিল। এইজি ওয়েলস এর ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস, জ্যোতিবিজ্ঞানী পার্সিভ্যাল লয়েলের কর্মকাণ্ড মঙ্গলকে মানুষের কাছে চাঁদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ট করে তোলে। এখন মানুষ সত্যি সত্যি মঙ্গলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনেকে বলছে এত তাড়াতাড়ি মঙ্গলে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু চেষ্টাতো চলছে। সেই কারণে মানুষ মঙ্গল ও সৌরজগৎ নিয়ে ভাবছে, পৃথিবীর বাইরেও যে জগৎ আছে সেখানেও যে যাওয়া যায় তা উপলব্ধি করতে শুরু করেছে। আমি মনে করি এটা মানুষের ভাবনার জগৎ এবং দেখা সীমানা বৃদ্ধি করবে। আর যেহেতু প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে, অতএব দুদিন আগে বা পরে মঙ্গলে মানুষ হবে।

ড. অনীশ মণ্ডল, সভাপতি, কসমিক কালচার

সভ্যতায়নের সঙ্গে উপনিবেশ গড়ার একটি নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। তাই সভ্যতার ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই উদ্যোগ একান্তভাবে জরুরি বলে আমি মনে করি। আমরা স্বপ্নাতুর! স্বপ্নের আরেকটি পৃথিবী গড়ে তোলার এই প্রচেষ্টায় মানুষ বিস্তৃত করবে তার স্বপ্নের পরিধিকে। আর মানুষ জন্মগতভাবেই যাযাবর বৈশিষ্ট্যের। মঙ্গলযাত্রার মাধ্যমে সেই চিরন্তন মনোবৃত্তির ধারাবাহিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
মহাবিশ্বের প্রারম্ভিক অবস্থার খোঁজেজেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের প্রথম রঙীন ছবি প্রকাশ
ব্ল্যাকহোল থেকে আলোকরশ্মির নির্গমন! পূর্ণতা মিলল আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের
প্রথম চন্দ্রাভিযানের নভোচারী মাইকেল কলিন্স এর জীবনাবসান
মঙ্গলে ইনজেনুইটি’র নতুন সাফল্য
শুক্র গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য নির্দেশকের সন্ধান লাভ
আফ্রিকায় ৫০ বছর পরে নতুনভাবে হস্তিছুঁচোর দেখা মিলল
বামন গ্রহ সেরেসের পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতার কারণ লবণাক্ত জল
রাতের আকাশে নিওওয়াইস ধূমকেতুর বর্ণিল ছটা,আবার দেখা মিলবে ৬,৭৬৭ বছর পরে!
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২০
মহাকাশে পদার্পণের নতুন ইতিহাস নাসার দুই নভোচারী নিয়ে স্পেসএক্স রকেটের মহাকাশে যাত্রা