সোমবার ● ১৫ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: মহাকাশ » ১১ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের মহাজাগতিক বেতার তরঙ্গ বিস্ফোরণ সনাক্ত
১১ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের মহাজাগতিক বেতার তরঙ্গ বিস্ফোরণ সনাক্ত
সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে একটি আন্তর্জাতিক গবেষনা দল জানিয়েছেন তারা বহির্জাগতিক চারটি বেতার তরঙ্গের বিস্ফোরণ সনাক্ত করেছেন যা মহাজাগতিক পথ অতিক্রম করেছে। এদের ঔজ্জ্বলতা আর দূরত্বের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন এদের উৎপত্তি হয়েছিল মহাবিশ্বের বয়স যখন বর্তমান সময়ের অর্ধেক ছিল সেই সময়ে। বিষ্ফোরণের উৎগত শক্তি থেকে ধারণা করা হচ্ছে এদের উৎপত্তি কোন চূড়ান্ত মহাজাগতিক ঘটনায় যেমন নিউট্রন তারা বা কৃষ্ণগহ্বর এর মতো আপেক্ষিকতাসম্প্ন্ন আধার থেকে।
গবেষনা কাজের প্রধান ড্যান থর্টন জানান, “এই আবিস্কার সেই সকল চরম মহাজাগতিক ঘটনাকেই ইঙ্গিত করছে যেখানে অত্যধিক ভর বা শক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। প্রায় ছয় বছর আগে আমাদের গ্যালাক্সির বাইরে একটি একক বেতার বিস্ফোরণ ধরা পড়েছিল, কিন্তু কেউই সঠিকভাবে জানতো না এটি কি ছিল বা সত্যিই এর অস্তিত্ব রয়েছে কিনা। ফলে আমরা গত চার বছর ধরে অনুরূপ আরও কোন বেতার বিস্ফোরণের সন্ধান করেছি। এই নিবন্ধে চারটি বেতার বিস্ফোরণের কথা বলা হয়েছে যাদের সন্দেহাতীতভাবে অস্তিত্ব রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রাপ্ত এই বেতার বিস্ফোরণের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র কয়েক মিলিসেকেন্ড এবং এদের মধ্যে দূরবর্তীটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১১ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরত্বে।”
উল্লেখ্য, প্রতি দশ সেকেন্ডে এরকম ক্ষুদ্র বেতার বিস্ফোরণ মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। ম্যাক্স-প্লাঙ্ক ইনষ্টিটিউট এর পরিচালক মাইকেল ক্র্যামার ব্যাখ্যা করেন, চোখের পলকে ঘটে যাওয়া এই বেতার বিস্ফোরণ সনাক্ত করতে আমাদের বর্তমান সময়ের টেলিস্কোপগুলোকে সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে তাক করতে হবে। কিন্তু যদি আমরা বেতার চোখে তাকাই তবে প্রতিদিনই এমন বেতার বিস্ফোরণ আমাদের চোখে ধরা পড়বে।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইটালী, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের নিয়ে গঠিত এই দলটি অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত কমনওয়েল্থ সায়েন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (CRISO) এর ৬৪ মিটার রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করেন এই তথ্য উদঘাটন করেন। গবেষকদের মতে, এই আবিস্কার পৃথিবী ও বিস্ফোরণ সংঘঠিত অঞ্চলের মধ্যবর্তী এলাকা সম্পর্কে ধারণা দেবে। দুটি গ্যালাক্সির মধ্যবর্তী শূন্য অঞ্চল সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কোন সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। গবেষকরা আশা করছেন বেতার বিস্ফারণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তারা মহাবিশ্বের অনেক পদার্থের সন্ধান মিলবে।
সূত্র: সায়েন্স ডেইলী [০৬ জুলাই, ২০১৩]