বুধবার ● ১০ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: মহাকাশ » শনিগ্রহের চারটি নতুন তথ্য
শনিগ্রহের চারটি নতুন তথ্য
শনিকে ঘিরে ১৩ বছরের পরিক্রমা সেরে ক্যাসিনি তার মিশন শেষ করে ২০১৭ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর- গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে ডুব দিয়ে। শেষ সময়ের পাওয়া তথ্য থেকে বিজ্ঞানীরা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন, তার মধ্যে ৪ টি তথ্য উল্লেখ করা হলো।
১. শনির বলয়গুলো হিমায়িত রাসায়নিক পদার্থের তৈরি
পূর্ববর্তী হিসাব নিকাশ থেকে ধারণা করা হতো যে শনির বলয়গুলো মূলত হিমায়িত পানির কণা দিয়ে তৈরি, তবে পুরো মিশ্রণটা কি দিয়ে তৌরি তা ছিল অজানা।ক্যাসিনী শেষ সময়ে বলয় থেকে গ্রহটিতে পরে যাওয়া কণাগুলো নিয়ে গবেষণা করে। বলয় থেকে গ্রহে কণার পতনের এই ঘটনাকে বলয় বৃষ্টি বলে। বিজ্ঞানীরা নমুনা বিশ্লেষণ করে মিথেন, আণবিক নাইট্রোজেন এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড খুঁজে পান, ক্যাসিনি সেই সাথে অ্যামোনিয়া আর ক্ষুদ্র ন্যানো বরফের টুকরোর সাথে যুক্ত জৈবিক পদার্থ সনাক্ত করতে পেরেছে।
২. একটু বৃষ্টি নয়, প্রবল বর্ষণ
বলয়ের যেসব উপাদান শনির উপর ঝরে পরে, তার বেশির ভাগই আসে গ্রহটির সবচেয়ে কাছের বলয় ডি বলয় থেকে। বলয়গুলোর শনিকে ঘিরে ঘূর্ণনের সময় প্রতি সেকেন্ডে ১০ টন পরিমান বরফ কণার পতন ঘটে, যেসব কণার উপাদান উপরে উল্লেখিত হয়েছে। এই তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক মিলিয়ন বছর পরে গ্রহটির নিরক্ষীয় আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসবে| পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা বলয়ের স্থায়িত্ব নিয়ে ভাবছেন, যে হারে বলয় থেকে বর্ষণ হচ্ছে, তাতে সি বলয় থেকে উপাদান এর যোগান না পেলে কয়েক মিলিয়ন বছর পরে ডি বলয় নিঃশ্বেষ হয়ে যাবে।
৩. শনির বলয় আর শনির মাঝে রেডিয়েশন বেল্টের হদিস
পৃথিবীর মতো যেসব গ্রহের চৌম্বকীয় ক্ষেত্র আছে, তাদের ঘিরে রেডিয়েশন বেল্ট থাকে যা আয়নিত কণার সংস্পর্শে আসলে তাকে আটকে দেয়। বিজ্ঞানীরা জানতো শনির বলয় কে ঘিরেও রেডিয়েশন বেল্ট আছে, কিন্তু গ্রহটির আর তার বলয়ের মধ্যেও রেডিয়েশন বেল্ট আছে কিনা তা ছিল তর্কের বিষয়। ক্যাসিনি সেই তর্কের অবসান করলো গ্রহটির আবহাওয়ার উপর আয়নিত প্রোটনের বেল্টের সন্ধান পেয়ে।
৪. পৃথিবীর মতো, অরোরা থেকে রেডিও নিঃসরণ ঘটে
ক্যাসিনি শনির চৌম্বক আবহাওয়ায় ভ্রমণের সময় এর অরোরা থেকে রেডিও নিঃসরণ পর্যবেক্ষণ করে। শনিগ্রহের অরোরার সাথে পৃথিবীর অরোরার কিছু মিল আছে, আয়নিত পদার্থ চৌবক ক্ষেত্রে প্রবেশের পরে কিছু পরমাণু কে উত্তেজিত করতে পারে। তবে শনির অরোরা পৃথিবীর মতো অক্সিজেন আর নাইট্রোজেন কে না করে হাইড্রোজেন কে উত্তেজিত করে অতিবেগুনি রশ্মি তৈরি করে। পৃথিবীতে যেমন অরোরা সৃষ্টিকারী আয়নিত পদার্থ রেডিও তরঙ্গ নিঃসরণ করে শনিও ১০ কিলোহারজ থেকে ২০ কিলোহারজ ফ্রেকুয়েন্সির মধ্যে রেডিও নিঃসরণ করে, যা শনির বায়ুমণ্ডলের কয়েকশত হাজার কিলোমিটার উপরে বিস্তৃত।
সূত্র: স্কাইএন্ডটেলিস্কোপ.কম
বিষয়: #শনিগ্রহের চারটি নতুন তথ্য