সর্বশেষ:
ঢাকা, মে ১৪, ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১

cosmicculture.science: বিজ্ঞানকে জানতে ও জানাতে
রবিবার ● ১৯ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » সাক্ষাৎকার » প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তি প্রসঙ্গে পল এরিখ
প্রথম পাতা » সাক্ষাৎকার » প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তি প্রসঙ্গে পল এরিখ
৫০৯ বার পঠিত
রবিবার ● ১৯ জুলাই ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তি প্রসঙ্গে পল এরিখ

কয়েক লক্ষ বছর ধরে সগর্বে পৃথিবী রাজত্ব করা মনুষ্য প্রজাতি ভবিষ্যতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে এমনটা শুনলে সকলেরই চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার কথা! কিন্তু আদতে এমন সতর্কবাণীই শুনিয়েছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এর আগে পৃথিবীতে প্রাণীকূলের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল আজ থেকে ৬ কোটি ৫০ লাখ বছর আগে অতিকায় ডাইনোসরের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হওয়ার মধ্যে দিয়ে। ধারণা করা হয়, তখন অতিকায় গ্রহাণুপুঞ্জ পৃথিবীতে আঘাত হানার কারণে সৃষ্টি হয়েছিল ‘নিউক্লিয়ার উইন্টার’ এর। অর্থাৎ গ্রহাণু পৃথিবীপৃষ্ঠে সজোরে আছড়ে পড়ার কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠের চারপাশে ঘন মেঘের স্তর সৃষ্টি হয়েছিল, যা পৃথিবী পৃষ্ঠে সূর্যের আলো পৌঁছতে বাধা দেয়। ফলশ্রুতিতে কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে খাদ্যাভাবে বিলুপ্তি ঘটে ডাইনোসরের।
গত ১৯ জুন, ২০১৫ তারিখে সায়েন্স অ্যাডভান্সেস সাময়িকীতে প্রকাশিত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, মেরুদণ্ডী প্রাণীরা স্বাভাবিকের চেয়ে ১১৪ গুণ দ্রুত হারে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই বিলীয়মান সারির প্রথমেই মনুষ্য প্রজাতি থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক বাণী করেছেন পৃথিবীর প্রাণীকূল ষষ্ঠবারের মতো গণবিলুপ্তির শিকার হতে যাচ্ছে, আর এটি ঘটবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি হারে। এই বিষয়ে আমরা যোগাযোগ করি গবেষণা কাজের সাথে সম্পর্কিত বিজ্ঞানীদের সাথে। ই-মেইলের মাধ্যমে কসমিক কালচারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তাদের একান্ত ভাবনা প্রকাশ পায়।

পল এরিখ
Paul R. Ehrlich
Bing Professor of Population Studies, Stanford University
President, Center for Conservation Biology Department of Biology
Adjunct Professor, University of Technology, Sydney
Honorary Professor, Sichuan University

 

প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তি প্রসঙ্গে পল এরিখআপনি কখন এবং কিভাবে ধারণা করলেন যে মনুষ্য সৃষ্ট প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি ঘটতে যাচ্ছে? এটি কি পর্যবেক্ষণগত কোন ফলাফল ছিল নাকি অন্য কোন বিষয়ে গবেষণা করার সময়ে এটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে? এই গবেষণার ভিত্তি কি?
বিজ্ঞানীরা গত শতাব্দী থেকেই বিলুপ্তির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। আমি সর্বপ্রথম ১৯৮১ সালে Extinction নামে একটি বই লিখি। আমাদের বর্তমান গবেষণাটি ছিল বিলুপ্তির নেপথ্য হার নির্ধারণ সম্পর্কে, যা প্রাকৃতিকভাবে ঘটা বিলুপ্তির মধ্যকার জীবাশ্ম বা ফসিল থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বের করা হয়। আমরা গবেষণায় পেয়েছি কিভাবে বিপুল সংখ্যক প্রজাতি অস্বাভাবিকহারে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, যা কিনা ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তিতে প্রবেশের ইঙ্গিতবাহী।

৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির সম্পূর্ণভাবে মানুষের সৃষ্টি বলে দাবি করা হলেও এর পেছনে কি অন্য কোন কারণ রয়েছে?
আদৌ অন্য কোন কারণ নেই, প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির জন্য মানুষ সম্পূর্ণভাবে দায়ী।

আমরা জানি ৫ম গণ বিলুপ্তির মধ্যে দিয়ে ডাইনোসর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং তার পরবর্তীতে প্রাকৃতিক বাছাইয়ের মাধ্যমে মানুষই সর্বোচ্চ প্রজাতি হিসেবে বর্তমানে টিকে রয়েছে। তাহলে প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির পরে ঠিক কি ঘটবে বলে আপনি মনে করেন?
এই বিষয়ে কেউই ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে না। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি কিছু মানুষ হয়তো এই বিলুপ্তির হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে।

প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি কি অবশ্যম্ভাবী? এই গণ বিলুপ্তি রোধ বা ঠেকানোর কোন কার্যকরী উপায় কি রয়েছে?
আমরা কঠোরভাবে এবং দ্রুততার সাথে নিজেদের অভ্যেসগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হয়তো এটিকে রোধ করা সম্ভব। বিপুলসংখ্যক মানুষের মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশের ক্ষতিসাধনই এই বিলুপ্তির মূল কারণ।

২০০৪ সালের দিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সেটি কি বর্তমান গবেষণা থেকে ভিন্নতর ছিল অথবা দুইয়ের মধ্যে কোন সাদৃশ্য রয়েছে কি?
বর্তমান গবেষণার ফল এটাই নির্দেশ করে পূর্বতন ধারণাটি সঠিক ছিল এবং আমরা তাই বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি।

মনুষ্য সৃষ্ট ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির কারণ হিসেবে কোন বিষয়টিকে আপনি উল্লেখযোগ্য মনে করছেন? এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর কি ভূমিকা থাকতে পারে?
প্রাণীর আবাসন ধ্বংস করা, জলবায়ুগত ব্যাঘাত সৃষ্ঠি, বিভিন্নভাবে বিষাক্ততা ছড়ানো, অতি চাষ প্রভৃতি বিষয়গুলোও এই বিলুপ্তির পেছনে ক্রিয়াশীল। অনুন্নত দেশগুলো ক্ষতিসাধনের ব্যাপারে উন্নত দেশের মতো এক্ষেত্রে ভূমিকা না রাখলেও তাদের জনসংখ্যা হ্রাস ও ধ্বংসের প্রবণতা কমিয়ে এনে গণ বিলুপ্তি রোধের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে।

অতি দ্রুত জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহার বন্ধ করা, সর্বত্র নারীর সাম্যতা ও সুযোগ নিশ্চিত করা, আধুনিক গর্ভনিরোধক ব্যবহার, সকল যৌনসক্ষম ব্যক্তিপর্যায়ে গর্ভপাতকে সমর্থন দেয়া প্রভৃতিভাবে নিজ নিজে ক্ষেত্রে আমরা অবদান রাখতে পারি।

৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি রোধে আপনি ব্যক্তিগতভাবে কোন উদ্যোগে শামিল হয়েছেন কি?
বিজ্ঞানী, মানবতকর্মী, নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে The Millennium Alliance for Humanity and the Biosphere (MAHB) নামে আমাদের একটি উদ্যোগ রয়েছে। এখানে এই বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনার সুযোগ রয়েছে, চাইলে যেকেউ এর সাথে যুক্ত হতে পারেন।
প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তি প্রসঙ্গে পল এরিখ
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: যোয়েল কর্মকার
১৮ জুলাই, ২০১৫





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
মহাবিশ্বের প্রারম্ভিক অবস্থার খোঁজেজেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের প্রথম রঙীন ছবি প্রকাশ
ব্ল্যাকহোল থেকে আলোকরশ্মির নির্গমন! পূর্ণতা মিলল আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের
প্রথম চন্দ্রাভিযানের নভোচারী মাইকেল কলিন্স এর জীবনাবসান
মঙ্গলে ইনজেনুইটি’র নতুন সাফল্য
শুক্র গ্রহে প্রাণের সম্ভাব্য নির্দেশকের সন্ধান লাভ
আফ্রিকায় ৫০ বছর পরে নতুনভাবে হস্তিছুঁচোর দেখা মিলল
বামন গ্রহ সেরেসের পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতার কারণ লবণাক্ত জল
রাতের আকাশে নিওওয়াইস ধূমকেতুর বর্ণিল ছটা,আবার দেখা মিলবে ৬,৭৬৭ বছর পরে!
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২০
মহাকাশে পদার্পণের নতুন ইতিহাস নাসার দুই নভোচারী নিয়ে স্পেসএক্স রকেটের মহাকাশে যাত্রা