শুক্রবার ● ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: মহাকাশ » নক্ষত্র বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটন
নক্ষত্র বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটন
কোন নক্ষত্রের সুপারনোভা বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি অন্যতম রহস্য। তবে শেষ পর্যন্ত নাসা’র নিউক্লিয়ার স্পেকট্রোস্কোপিক টেলিস্কোপ অ্যারে (NuSTAR) এর সহায়তায় এই অমিমাংসীত রহস্যের জট খোলা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞান জার্নাল নেচারে সম্প্রতি এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
উচ্চ-শক্তি এক্সরে অবজারভেটরি সুপারনোভার অবশেষ থেকে তেজস্ক্রিয় বস্তুর প্রথম মানচিত্র তৈরি করেছে। ক্যাসিওপিয়া-এ নামের অবশেষ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে কিভাবে শক ওয়েভ বিশাল মুমূর্ষূ নক্ষত্রকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
নিউস্টার এর প্রধান তদন্তকারী ফিওনা হ্যারিসন বলেন, “নক্ষত্ররা হচ্ছে গোলাকাকার গ্যাসীয় বলয়, তাই হয়তো আপনি ভাবতে পারেন কখন তারা জীবনের প্রান্তসীমায় পৌঁছায় ও বিস্ফোরিত হয়। আমাদের নতুন গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল দেখিয়েছে বিস্ফোরণের পূর্বে অভ্যন্তরভাগে আঘাত হানার ফলে কিভাবে বিস্ফোরণের অন্তর্স্থল বিকৃত হয়ে যায়।”
ক্যাসিওপিয়া-এ সৃষ্টি হয়েছিল যখন একটি বিশাল নক্ষত্র সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হয়ে নাক্ষত্রিক শব রেখে যায়। এই বিস্ফোরণের আলো মাত্র কয়েকশত বছর পূর্বে পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে, ফলে আমরা সেই সদ্যোজাত নাক্ষত্রিক ধ্বংসাবশেষকেই দেখতে পাচ্ছি।
সুপারনোভা মহাবিশ্বে বহু উপকরণের বীজ ছড়িয়ে দিয়েছে, এমনকি জুয়েলারিতে শোভা পাওয়া স্বর্ণ, হাড়ের ক্যালসিয়াম, রক্তের লৌহ প্রভৃতি। যখন সূর্যের মতো ক্ষুদ্র নক্ষত্র ধ্বংস হয় তখন তার প্রচণ্ডতা অপেক্ষাকৃত কম থাকে, কিন্তু সূর্যের চেয়ে আট গুণ বেশি ভরের নক্ষত্ররা সুপারনোভা বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়। অত্যুচ্চ তাপমাত্রা এবং হালকা উপাদানসমূহ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে একীভূত হয়ে ভারী উপাদান সৃষ্টি করে।
নিউস্টার-ই হচ্ছে প্রথম টেলিস্কোপ যা সুপারনোভার অবশেষ থেকে তেজস্ক্রিয় বস্তুর প্রথম মানচিত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। উপরোক্ত ক্ষেত্রে উপাদান ছিল টাইটেনিয়াম-৪৪ এবং বিস্ফোরিত নক্ষত্রের কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয় অস্থিত নিউক্লিয়াস। ক্যাসিওপিয়া-এ এর ক্ষেত্রে নিউস্টার মানচিত্র দেখিয়েছে কিভাবে মৃত্যুমুখে পতিত নক্ষত্রের রহস্যের সম্ভাব্য সমাধান বের করা যায়। বিজ্ঞানীদের এই অনুসন্ধান দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে যে বিস্ফোরিত নক্ষত্র চতুর্দিকে আঘাত হানে, শক ওয়েভ পুনর্বিণ্যস্ত করে এবং সবশেষে বহিঃর্স্তরে বিস্ফোরণ ঘটায়। গবেষকরা এখনো এই নাটকীয় বিস্ফোরণের বিশদ কারণ অনুসন্ধান করে যাচ্ছেন।
সূত্র: নাসা
ফেব্রুযারি ২১, ২০১৪