মঙ্গলবার ● ১০ ডিসেম্বর ২০১৩
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: মহাকাশ » শনি উপগ্রহ টাইটান সম্পর্কে নতুন তথ্য
শনি উপগ্রহ টাইটান সম্পর্কে নতুন তথ্য
নাসা’র ক্যাসিনি মহাকাশযান সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের কাছে শনির অন্যতম উপগ্রহ টাইটানের হাইড্রোকার্বন হ্রদ ও সাগর সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য প্রদান করেছে। টাইটান হচ্ছে আমাদের সৌরজগতের মধ্যে পৃথিবী-সদৃশ একটি স্থান যার পৃষ্ঠাভাগে সুস্থিত তরলের উপস্থিতি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনি ফ্লাইবাই করার সময় টাইটানের উত্তর গোলার্ধে এমন অঞ্চলের সন্ধান পেয়েছে যেখানে উপগ্রহটির প্রায় সকল হ্রদ ও সাগরগুলো অবস্থিত। বিজ্ঞানীরা ক্যাসিনি মহাকাশযানের রাডার থেকে ধারণকৃত পুঙ্খানুপুঙ্খ মাল্টি-ইমেজ নকশার মাধ্যমে এই অঞ্চলের সন্ধান পান। এর আগে কয়েকটি ফ্লাইবাইতে ভিন্ন এঙ্গেল থেকে এই অঞ্চলের ছবি ধারণ করা হয়েছিল, ফলে এবারে বিজ্ঞানীরা টাইটানের বৃহত্তম সাগর ক্রাকেন মারে ও দ্বিতীয় বৃহত্তম সাগর লিজিয়া মারে এবং নিকটবর্তী কয়েকটি হ্রদের চতুর্দিকে যোগসূত্র স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন।
নাসা জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষণা দলের প্রধান স্টিভ ওয়াল বলেন, ‘টাইটানের পৃষ্ঠভাগের বৈশিষ্ট্য যেমন হ্রদ ও সাগর সম্পর্কিত তথ্য আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে কিভাবে তরল, কঠিন ও গ্যাসীয় মিথস্ক্রিয়ার ফলে ধীরে ধীরে এটি পৃথিবী-সদৃশ হয়ে উঠেছে।’
নতুন প্রাপ্ত ছবিগুলোতে দেখা গেছে ক্রাকেন মারে পূর্বের ধারণার চেয়ে অধিকতর বিস্তৃত ও জটিল। টাইটান প্রপাতের প্রায় সকল হ্রদই ৬০০ থেকে ১১০০ মাইল বিস্তৃত এলাকায় পরিণত করেছে। টাইটান প্রপাতের মাত্র তিন শতাংশ তরল এই অঞ্চলের বাইরে রয়েছে।
ক্যাসিনি রাডার দলের সদস্য রানডল্ফ ক্রিক বলেন, টাইটানের হ্রদগুলো এখানে অবস্থিত হওয়ায় বিজ্ঞানীরা সত্যিই বিস্মিত হয়েছেন। প্রাপ্ত ছবিগুলো আমাদের দেখিয়েছে যে জমাট শিলা ও ভূস্তর বিশেষভাবে হ্রদগুলোর জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এটি সম্ভবত প্রাগৈতিহাসিক কোন হ্রদের গঠনের মত যেমন নেভাদা ও ক্যালিফোর্ণিয়ার ল্যাহন্টান হ্রদ, যেখানে কঠিন উপরিভাগ বেঁকে গিয়ে ফাটলের সৃষ্টি করে যা পরবর্তীতে তরল দ্বারা পূর্ণ হয়।
নতুন এই আবিস্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তরলের বেশিরভাগই মিথেনে, যা পৃথিবীর প্রাকৃতিক গ্যাসের সাথে কিছুটা সাদৃশ্যপূর্ণ। ক্যাসিনি’র বিজ্ঞানীদের এই অনুসন্ধানের প্রধান লক্ষ্য হলো টাইটানের সমূদয় তরলের পরিমাণ নির্ধারণ করা। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন টাইটানে প্রায় ৯০০০ ঘনফুট তরল হাইড্রোকার্বন রয়েছে, যা পৃথিবীর মজুদ তেলের চেয়ে প্রায় চল্লিশ গুণ বেশি।
সূত্র: নাসা
১০ ডিসেম্বর, ২০১৩