রবিবার ● ১০ নভেম্বর ২০১৩
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান নিবন্ধ: বিবর্তনের পথে » চার্লস ডারউইন এর প্রতি চার্চের ক্ষমাপ্রার্থনা
চার্লস ডারউইন এর প্রতি চার্চের ক্ষমাপ্রার্থনা
১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে চার্লস ডারউইন এর বিখ্যাত বই ‘On the Origin of Specis’ প্রকাশের পর পরই খ্রিষ্টান সমাজে বিতর্কের ঝড় ওঠে। ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার অপরাধে তিনি খ্রিষ্টত্ব হারান। ইংল্যন্ডের চার্চগুলো তৎকালীন সময়ে বিবর্তনবাদকে ঈশ্বর বিরোধী আখ্যা দিয়ে ডারউইনকে দোষী সাব্যস্ত করে। যেমনটি সপ্তদশ শতকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলির প্রতিও করা হয়েছিল।কিন্তু প্রায় দেড়শ বছর পর জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও যৌক্তিক অগ্রসরমান সভ্যতার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ ইংল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষ অ্যাংলিকান চার্চ ‘চার্চ অব ইংল্যান্ড’ আনুষ্ঠানিকভাবে ডারউইনের প্রতি তাদের অতীত কর্মকান্ডের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে।
ডারউইনের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকীতে তাঁর সঠিক মূল্যায়ণ করতে ও এ সম্পর্কে তাদের ভুল সংশোধন করতে ‘চার্চ অব ইংল্যান্ড’ তাদের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে ক্ষমাপ্রার্থনাসূচক বক্তব্য প্রকাশ করে।
চার্চের মিশন এবং গণসংযোগ বিভাগের প্রধান রেভাঃ ড. ম্যালকম ব্রাউনের উদ্ধৃতিতে প্রকাশ করা হয়:
“চার্লস ডারউইন; আপনার জন্মের ২০০ শত বছর পর চার্চ অব ইংল্যান্ড আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাকে ভুল বোঝার জন্য এবং আমাদের প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে অন্যদের ভুল বোঝানোর জন্য। আশাকরি তা কিছুটা সংশোধিত হবে।
আমরা প্রাচীণ বিশ্বাসের বিশষ্ট্যগুলো চর্চা করছি যাতে আমরা তা বুঝতে পারি এবং আশা করি তা কিছু পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। কিন্তু এই চেষ্টা এখনো সফল হয়নি এবং সমস্যা শুধু ধর্মীয় শত্রুরা নয়, তারাও যারা মিথ্যাভাবে তাদের স্বার্থের জন্য আপনাদের সমর্থন চায়। প্রতিটি ভাল ধর্মের বিজ্ঞানের সাথে মিলে গঠনমূলক কাজ করা উচিত এবং আমি এটি বলার সাহস রাখি যে প্রতিপক্ষরাও সত্য হতে পারে।
মানুষ এবং প্রতিষ্ঠান ভুল করে এবং খ্রিষ্টানরা ও চার্চ এর ব্যতিক্রম নয়। যখন একটি বড় নতুন ধারনার উত্থান হয়, যা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টিয়ে দিতে সক্ষম, এটা সহজেই বোঝা যায় যে প্রতিটি পুরানো ধারনা হুমকির মুখে পড়ে এবং তখন পুরানো ও নতুনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
ডারউইনের চিন্তা না মানা ছিল অতিরিক্ত রক্ষণশীল এবং অতিরিক্ত আবেগীয়। এটাকে বলা হবে বিবর্তনবিরোধী উদ্দীপনা। চার্চের সেই শ্রেণী যারা সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসী এবং ডারউইনের দর্শনকে খ্রিষ্টান বিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিপরীত জানে তাদের মাঝে তীব্র আন্দোলন নিশ্চিত।”