বুধবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০১১
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ » সময় ভ্রমন অবাস্তব কিছু নয়: স্টিফেন হকিং
সময় ভ্রমন অবাস্তব কিছু নয়: স্টিফেন হকিং
ডিসকভারি চ্যনেলের নির্মিত এক তথ্যচিত্রে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং সময় ভ্রমন সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। তিনি মন্তব্য করেন, “সময় ভ্রমন এক সময় বৈজ্ঞানিক মতের বিরুদ্ধাচরণ হিসেবেই বিবেচিত হত এবং মাথা পাগলা বদনামের ভয়ে আমিও এসব নিয়ে আলোচনা থেকে বিরত থাকতাম, কিন্তু এখন আর আমি অতোটা চিন্তিত নই।”
হকিং এর মতে, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ভিত্তিতেই অতিবৃহৎ ‘রিলেটিভিস্টিক মহাকাশযান’ নির্মাণ সম্ভব। আইনস্টাইন তার আপেক্ষিকতা তত্ত্বে দেখিয়েছেন আলোর কাছাকাছি গতি সম্পন্ন কোন বস্তু তার ধারণকৃত সময়কে শ্লথ করে দেয়। সাধারণ গাড়ি বা বিমানের গতি এই তুলনায় উপেক্ষিত, কিন্তু হকিং প্রস্তাবিত মহাকাশযানে চূড়ান্ত শক্তি অর্জনের পর তা আলোর গতির ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছবে।
হকিং বলেন, তত্ত্বীয়ভাবে এরকম মহাকাশযানের গতি ঘন্টায় ৬৫ কোটি মাইল হওয়া সম্ভব, কিন্তু এর জন্য যে বিপুল পরিমাণ জ্বালানী প্রয়োজন হবে তা সহজে বহন করার কোন উপায় বের করতে হবে।
তিনি জানান, এই গতিতে পৌঁছতে মহাকাশযানটির সময় লাগবে ছয় বছর। প্রথম দুই বছরে এটি আলোর গতির অর্ধেকে পৌঁছবে এবং সৌরজগত ছাড়িয়ে অনেক দূরে চলে যাবে। পরবর্তী দুই বছরে এটি আলোর গতির ৯০ শতাংশ পয পৌঁছবে। সর্বশেষ দুই বছরে এই গতি বেড়ে দাঁড়াবে আলোর গতির ৯৮ শতাংশ। আর এই গতিতে আমাদের ছায়াপথের প্রান্তে পৌছতে সময় লাগবে মাত্র ৮০ বছর। তবে হকিং সময় ভ্রমনের মাধ্যমে অতীতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছেন। যদিও কোন কোন বিজ্ঞানী ওয়ার্মহোল বা গেটওয়ের মাধ্যমে মহাবিশ্বের কোন দুই প্রান্তের যোগাযোগের পথ ধরে সময়ের সামনে বা পিছনে ভ্রমনের তত্ত্ব দাঁড় করান। কোয়ান্টাম স্কেলে তত্ত্বীয়ভাবে ওয়ার্মহোলের অস্তিত্ব প্রমান করা গেলেও তা পরমানুর চেয়েও ক্ষুদ্র কণার জন্য প্রযোজ্য। অবশ্য তারপরেও হকিং সেই পুরানো ‘পাগলা বিজ্ঞানীর প্যারাডক্স’র উদাহরণ টেনে দেখিয়েছেন, যেখানে কেউ অতীতে ফিরে গিয়ে নিজেকে হত্যা করে পুনরায় বর্তমানে ফিরে এল। কাজেই আমাদের পক্ষে কেবল ভবিষ্যতেই যাওয়া সম্ভব, অতীতে নয়।
টাইমস অনলাইন