রবিবার ● ৩ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » গ্রহাণূ » গ্রহাণু বেষ্টনী
গ্রহাণু বেষ্টনী
মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, বেষ্টনী আকৃতি বিশিষ্ট সৌরজগতের অংশবিশেষ গ্রহাণু বেষ্টনী নামে পরিচিত। অনিয়মিত আকারের অসংখ্য গ্রহাণু এই বেষ্টনীতে থেকে সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। পৃথিবীর নিকটবর্তী গ্রহাণু ও ট্রোজান গ্রহাণু থেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য গ্রহাণু বেষ্টনী কে প্রধান গ্রহাণু বেষ্টনী বলা হয়। গ্রহাণূ বেষ্টনীর প্রায় অর্ধেক ভর এর সর্ববৃহৎ চারটি গ্রহাণু, যথা: সেরেস, ভেস্তা, প্যাল্যাস, ও হাইজিয়া - এর মাঝে নিহিত। গ্রহাণু বেষ্টনীর মোট ভর চাঁদের ভরের প্রায় ৪%, যা প্লুটোর চেয়ে যথেষ্টই কম, এবং প্লুটোর উপগ্রহ শ্যারনের (যার ব্যাস প্রায় ১২০০ কিমি) প্রায় দ্বিগুণ।
সেরেস সৌরজগতের সর্বাতিক্ষুদ্র এবং গ্রহাণু বলয়ের একমাত্র বামন গ্রহ। ১৮০১ সালের ১ জানুয়ারি জুসেপ্পি পিয়াজ্জি নামের একজন ইতালির পুরোহিত ও জ্যোতির্বিদ নক্ষত্র অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে প্রথমবারের মতো গ্রহাণু আবিষ্কার করেন। এর নামকরণ করা হয় সেরেস। পিয়াজ্জি প্রথমে ভেবেছিলেন তিনি হয়তো একটি ধূমকেতু খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু অন্যান্য বিজ্ঞানীরা মতামত দিলেন এটি একটি গ্রহ। কিন্তু মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝের বেষ্টনীতে যতোই গ্রহাণু আবিষ্কার হতে থাকছিল বিজ্ঞানীরা ততোই নিশ্চিত হচ্ছিলেন সেরেস একটি গ্রহাণু - এটিই ছিল প্রধান গ্রহাণু বেষ্টনীর সবচেয়ে বড় আকারের গ্রহাণু। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশীয় ইউনিয়ন সেরেসকে বামন গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৫ সালে নাসা প্রেরিত ডন মহাকাশযান প্রথম সেরেসকে পর্যবেক্ষণ করে।
বেশিরভাগ গ্রহাণু অনিয়মিত আকারের। যদিও কয়েকটি প্রায় গোলাকৃতির এবং প্রায়ই তারা খাঁজ কাটা বা গর্তে ভরা হয়। এগুলো উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে, নিজেরাও ঘুরছে কখনও কখনও অনিয়মিতভাবে, গড়িয়ে গড়িয়ে। ১৫০-এরও বেশি গ্রহাণু আছে যাদের সাথে একটি ছোট সহচর চাঁদ থাকতে দেখা যায় (কোনোটির সাথে দুইটি চাঁদও আছে)। যুগল গ্রহাণুও রয়েছে, যারা প্রায় একই আকারের এবং একে অন্যকে প্রদক্ষিণ করছে। কখনো কখনো ত্রয়ী গ্রহাণুরও দেখা মেলে।