বুধবার ● ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ: মহাকাশ » বাসযোগ্য পরিবেশে একটি নক্ষত্রকে ঘিরে ৭টি গ্রহের সন্ধান দিল বিজ্ঞানীরা
বাসযোগ্য পরিবেশে একটি নক্ষত্রকে ঘিরে ৭টি গ্রহের সন্ধান দিল বিজ্ঞানীরা
নাসা’র স্পিট্জার স্পেস টেলিস্কোপ প্রথমবারেরর মত একক নক্ষত্রের অধীনে সাতটি পৃথিবী সদৃশ গ্রহ আবিষ্কার করেছে। এর মধ্যে তিনটি গ্রহের বাসযোগ্য পরিবেশ থাকতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের এবং এর মধ্যে একটি পাথুরে গ্রহে সম্ভবত তরল পানি রয়েছে।
আমাদের সৌরজগতের বাইরে একক নক্ষত্রকে ঘিরে এত সংখ্যক বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান লাভ আগেকার সকল রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে।বিজ্ঞানীরা বলছেন, হতে পারে সাতটি গ্রহেই পানির অস্তিত্ব রয়েছে, যা প্রাণের বিকাশে মূখ্য সহায়ক এবং বাসযোগ্য পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।
পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে কুম্ভ বা অ্যাকুয়ারিস নক্ষত্রমন্ডলীতে এই গ্রহ সিস্টেম অবস্থিত, যাকে বিজ্ঞানীরা ‘ট্র্যাপিস্ট-১’ (The Transiting Planets and Planetesimals Small Telescope বা সংক্ষেপে TRAPPIST) নামকরণ করেছেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নাসা এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করে এবং বিজ্ঞান জার্ণাল ন্যাচার-এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
স্পিট্জার থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী গবেষকদের দলটি নির্ভুলভাবে সাতটি গ্রহেরই আকার ও তাদের ভর প্রাথমিকভাবে নির্ণয় করতে পেরেছেন। গ্রহগুলোর ঘনত্ব বিচারে পাথুরে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে জানা যাবে যে তাদের পৃষ্ঠতলে তরল পানির উপস্থিতি রয়েছে কিনা। তবে বিজ্ঞানীরা সপ্তম ও দূরবর্তী গ্রহটির ভর নির্ণয় করতে পারেননি, তাদের ধারণা এটি বরফাবৃত।
গবেষণা প্রবন্ধের মূল রচয়িতা ও প্রধান গবেষক মিখায়েল গিলন বলেন, ট্র্যাপিস্ট-১ সপ্তমাশ্চর্য হচ্ছে আবিষ্কৃত হওয়া পৃথিবী সদৃশ প্রথম গ্রহমন্ডলী যারা এরকম একটি নক্ষত্র পরিভ্রমনরত। পৃথিবী সদৃশ বিশ্বের বাসযোগ্য আবহমন্ডল সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করার তাই এটিই সর্বোত্তম লক্ষ্যবস্তু।
আমাদের সূর্যের বিচারে ট্র্যাপিস্ট-১ একটি অতি শীতল বামন নক্ষত্র, কারণ নক্ষত্রটির কাছাকাছি অবস্থান হওয়া সত্বেও গ্রহের পৃষ্ঠতলে পানির অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধ থেকে সূর্যের দূরত্বের থেকেও কম দূরত্বে গ্রহগুলি ট্র্যাপিস্ট-১ কে প্রদক্ষিণ করছে। এছাড়া গ্রহগুলিও পরস্পর বেশ কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থিত। ধরা যাক, কোন ব্যক্তি এই সাতটি গ্রহরে কোন একটির পৃষ্ঠতলে অবস্থান করছে, ফলে সেই ব্যক্তি পার্শ্ববর্তী গ্রহের ভৌগলিক অবস্থান সমূহ, মেঘমালা প্রভৃতি দেখতে পাবে, যেরকমটা আমরা চাঁদকে মাঝে মাঝে আকাশে খুব উজ্জ্বলভাবে কাছ থেকে দেখতে পাই।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন গ্রহগুলি কক্ষপথ পরিভ্রমনের সময় নক্ষত্রের দিকে শুধুমাত্র একপাশ প্রদর্শন করে, অর্থাৎ গ্রহগুলিতে বিরামহীনভাবে একদিকে দিন ও অন্যদিকে রাত থাকে। ফলে স্বভাবতই এখানকার আবহাওয়া সম্পূর্ণ পৃথিবীর বৈসাদৃশ্য।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭