সোমবার ● ১ জুলাই ২০১৩
প্রথম পাতা » বিজ্ঞান সংবাদ » সৌরজগতের সীমানায় ভয়েজার-১
সৌরজগতের সীমানায় ভয়েজার-১
মানবসভ্যতার ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোন মহাকাশযান আমাদের সৌরজগতের সীমানায় পৌছেঁছে। সৌরজগতকে ছাড়িয়ে অসীম শূন্যে পাড়ি জমানো এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। চলতি সপ্তাহে বিজ্ঞান জার্নাল সায়েন্স-এ প্রকাশিত প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয় মহাকাশযানটি এখন আমাদের সৌরসীমার প্রান্তে উপস্থিত।
নাসা’র ভয়েজার মিশনের প্রজেক্ট বিজ্ঞানী ড. এড স্টোন সঠিকভাবে বলতে পারেননি কখন ভয়েজার-১ মহাকাশযান সৌরজগত ত্যাগ করবে, কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন সেই মুহুর্ত আসন্ন। তিনি জানান “এটা হতে পারে যেকোন দিন, কিন্তু আবার কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে”।
ভয়েজার-১ পৃথিবী থেকে ১,১০০ কোটি মাইল দূরে সৌরজগতের বাইরে নতুন এক স্তরের সন্ধান পায়। বিজ্ঞানীরা একে ‘চৌম্বকীয় মহাসড়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মহাকাশযানটির ওপর সৌর আকর্ষণের পরিবর্তন এবং নতুন আকর্ষণের উপস্থিতি সাপেক্ষে বিজ্ঞানীরা এই প্রমান পান। ভয়েজার-১ থেকে পৃথিবীতে তথ্য আসতে এখন প্রায় ১৭ ঘন্টা সময় লাগছে।
সম্প্রতি বিবিসি কে দেয়া এক তথ্যে ড. স্টোন জানান, এটা কল্পনা করা কঠিন যে আমরা যে স্তর বাস করছি এবং বাইরের স্তর এই দুইয়ের মাঝে আরেকটি স্তর রয়েছে। ট্রপোলজিক্যালি এটাকে দূরবর্তী স্তর হিসেবে চিহ্নিত করলেও এখনো পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি এই স্তরের পুরুত্ব কতখানি এলাকা জুড়ে।
ভয়েজারের যন্ত্রপাতিসমূহ এখন দূর পরিবেশের নমুনা সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত। যা ড. স্টোন এবং তার সহকর্মীদের হেলিওস্ফেয়ারে পৌঁছতে ও এর আকৃতি নির্ধারণে সহায়তা করবে।
২০০৪ সালে মহাকাশযানটি একটি উত্তাল অঞ্চলে প্রবেশ করে, এলাকাটি আমাদের কাছে হেলিওসেথ অঞ্চল নামে পরিচিত যেখানে কনাগুলো বিভিন্ন দিকে উৎক্ষিপ্ত হচ্ছে। এটা ধারণা করা হয়েছিল যে, আন্তঃনাক্ষত্রিক শূণ্যতায় প্রবেশের পূর্বে এটিই হবে শেষ অবস্থা, কিন্তু ৩৫ বছরের মিশন শেষে এটি সত্যিই চমক সৃষ্টি করেছে। গত বছরেই নির্ধারিত হয়েছে যে দীর্ঘ মহাকাশযাত্রায় ভয়েজার-১ সৌরজগতের প্রান্তসীমায় পৌঁছেছে। এটি এমনই এক চৌম্বকীয় মহাসড়ক যেখানে শক্তি কনিকাগুলো সহজে বের হয়ে আসতে পারে না এবং মহাজাগতিক রশ্মি কনিকাগুলো এর বাইরে উদ্দীপ্ত হয়। এটি হলো সেই স্থান যেখানে সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্র একীভূত থাকে। মহাকাশযানটি ১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে প্রেরণ করা হয়। [২০ জুন, ২০১৩]